প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম। ১. ফজরের সময়ে ঘুম থেকে না উঠতে পেরে সকাল ৯ টায় উঠে যদি সাথে সাথে ফজরের নামায না পড়ে যোহরের আগে ফজর পড়ে তাহলে কি ইচ্ছাকৃত নামায ছেড়ে দেওয়ার গুনাহ হবে? ২. বাথরুম করার সময় কোন কারণে ঢিলা ব্যবহার করতে পারিনি। আন্ডারওয়্যারে কিছু প্রশাব লেগেছে হয়তো। এই অবস্থায় নামাজের সময়ও হয়েছে। অফিসে বা রাস্তায় থাকার কারণে আন্ডারওয়্যার পাল্টানো সম্ভব না হলে কি করব? ৩. আমাদের অফিসে জামাআতে নামায পড়ার ব্যবস্থা আছে। একজন ইমাম সাহেবও আছে। কোন কারণে ইমাম সাহেব অনুপস্থিত থাকলে অন্য একজন ইমামতি করে। তার কুরআন তিলাওয়াত সহীহ্ না। (হাফেজি মাদ্রাসায় পড়ার কারণে আমার কুরআন তিলাওয়াত সহীহ্) এই অবস্থায় আমি কি ওই লোকের পিছনে জামাআতে নামায পড়তে পারবো? আমি যদি ইচ্ছাকৃত জামাআত ছেড়ে দিয়ে একা নামায পড়ি তাহলে কি আমার গুনাহ হবে? আর যারা তার পেছনে নামায পড়ছে তাদের কি নামায সহীহ্ হচ্ছে? উল্লেখ্য, অশুদ্ধ কুরআন তিলাওয়াতকারী লোকের পিছনে নামায পড়লে আমি মনে শান্তি পাই না।

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম

১। ঘুম থেকে উঠার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা (যেমন ঘড়ি বা মোবাইলে অ্যালার্ম দেওয়া বা কাউকে ডাক দিতে বলা ইত্যাদি) নিয়েও না উঠতে পারলে যখনি উঠবে বিলম্ব না করে তাড়াতাড়ি ক্বাযা আদায় করে নিবে। বিনা উযরে বিলম্ব না করা চাই। যোহরের নামাযের পূর্বে পড়লে ইচ্ছাকৃত নামায ছেড়ে দেওয়ার গুনাহ হবে না। তবে উঠার কোন ব্যবস্থা না করলে এবং নিয়মিত এমনটি হতে থাকলে সেক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত নামায ছেড়ে দেওয়ার গুনাহ হবে।

২। এক্ষেত্রে বাসায় ফিরে যদি ওয়াক্তের মধ্যে নামায পড়া যায় তবে তাই করবেন। আর বাসায় ফিরতে ফিরতে ওয়াক্ত চলে গেলে যদি কোনভাবে (যেমন বাথরুমে গিয়ে) আন্ডারওয়্যার খুলে নামায পড়া যায় তবে তাই করবেন। আর এটাও সম্ভব না হলে, সেক্ষেত্রে পেশাব যদি এক দেরহাম (গোলকৃত ভাবে একটা কাঁচা টাকা অর্থাৎ হাতের তালুর নীচ স্থান পরিমানের সমান) পর্যন্ত শরীর বা কাপড়ে লাগে তবে তা সহ নামায আদায় করলে নামায হয়ে যাবে। এর চেয়ে বেশি হলে ঐ অবস্থায় নামায পড়ে নিবেন বটে তবে পরবর্তীতে তা ক্বাযা করে নিবেন।

উল্লেখ্য যে, পেশাব করার পর ঢিলা-কুলুপ বা পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা জরুরী। হাদীস শরীফে আছে কবরের অধিকাংশ আযাব পেশাবের ছিটা থেকে বেঁচে না থাকার কারনে হবে।–মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং ৬৫৪; আদ্দুররুল মুখতার ৩১৬; আল বাহরুর রায়েক ১/১২৫

৩। না, তার কিরাআত সহীহ না হলে আপনি তার পিছনে ইক্তেদা করবেন না। আশপাশে কোন মসজিদ থাকলে আপনি সেখানে যাবেন। আর মসজিদ বেশ দূরে হলে সেক্ষেত্রে একাই নামায পড়ে নিবেন।

অন্যদের কিরাআত সহীহ না থাকলে তারা তার পিছনে ইক্তেদা করতে পারবে। অন্যথায় নয়।

 

Loading