প্রশ্ন : ১। ফজরের নামায যদি ক্বাযা করি সেক্ষেত্রে কি সুন্নাত ও ফরজ দুইটাই ক্বাযা করতে হবে? আর এশার নামায ক্বাযা হলে ফরজ এর সাথে কি বিতরও ক্বাযা করতে হবে? ২। অনেক দিনের নামায না পড়ে থাকলে বা ক্বাযা না করে থাকলে সে ক্ষেত্রে কি করনীয়? ৩। ক্বাযা নামায কি মুল নামায এর আগেই পড়তে হবে? পরে কি পড়া যায় না? ধরুন আমি ফজরের নামায পড়ি নাই। এখন যোহরের নামায এর সময় ক্বাযা করব। কিন্তু আমি যোহরের নামায মসজিদে জামাআতে আদায় করতে গিয়ে দেখি জামাআত শুরু হয়ে গিয়েছে সেক্ষেত্রে কি আমি যোহরের চার রাকাআত সুন্নাত পরে পড়ে নিব নাকি না পড়লেও চলবে? আর ফজরের ক্বাযাটাও যোহর নামায শেষ করে পড়ে নিব?
উত্তর :১। যেদিন ফজরের নামায কাযা হয় যদি ঐ দিনই সূর্য ঢলে যাবার পূর্বে ক্বাযা পড়া হয় তবে ফজরের সুন্নাতের ক্বাযার বিধান রয়েছে। অন্যথায় (অর্থাৎ ঐদিনই সূর্য ঢলে যাবার পূর্বে ক্বাযা না পড়লে) ফজরের সুন্নাত ছেড়ে দিবে। কেননা সুন্নাতের ক্বাযা নেই।
অনুরূপভাবে ইশার নামায ছুটে গেলে ক্বাযা আদায়ের সময় (যেদিনই ক্বাযা করা হোক না কেন) বিতিরও ক্বাযা করতে হবে। –ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২১; রদ্দুল মুহতার ২/১৫।
২। এক্ষেত্রে (বালেগ হওয়ার পর) অতীতের ছুটে যাওয়া সকল নামায আপনাকে ক্বাযা করতে হবে। প্রথমে আপনি হিসাব করবেন আনুমানিক কত ওয়াক্তের নামায আপনার ক্বাযা হয়েছে। সঠিক হিসাব বের করতে না পারলেও প্রবল ধারণার ভিত্তিতে এমন একটা হিসাব বের করবেন, যার ক্বাযা আদায় করলে অন্তরে এই ইয়াকীন হাছিল হয় যে, আমার জিম্মায় আর কোন নামায ক্বাযা নেই। এরপর ধীরে ধীরে তা আদায় করতে থাকবেন। আর নিয়ত এভাবে করবেন (যেমন ফজরের ক্ষেত্রে) আমার জিম্মায় যে ফজরের নামাযগুলো রয়েছে তার প্রথমটা বা শেষটার ক্বাযা আদায় করছি। এভাবে অন্যান্যগুলো নিয়ত করবেন।–হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃষ্ঠা ৪৪৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৭৬৬
৩। যোহরের নামায মসজিদে জামাআতে আদায় করতে গিয়ে যদি দেখা যায় জামাআত শুরু হয়ে গিয়েছে, তবে আগে জামাআতে শরীক হবে। অতঃপর দুই রাকাআত সুন্নাত পড়ে তারপর চার রাকাআত সুন্নাত পড়বে। এক্ষেত্রে পূর্বের চার রাকাআত সুন্নাত ছেড়ে দিবে না।
ছয় ওয়াক্তের কম নামায ক্বাযা হলে ওয়াক্তিয়া নামাযের পূর্বে ক্বাযা নামায তারতীব অনুযায়ী আদায় করা জরুরী। অর্থাৎ প্রথম যে নামায ক্বাযা হয়েছে তা প্রথমে আদায় করবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে সবগুলো আদায় করবে। এই তারতীবে খেয়াল রাখা ওয়াজিব। তবে যখন ওয়াক্তিয়া নামাযের সময় এত সংকীর্ণ হয় যে ক্বাযা নামায পড়লে ওয়াক্ত চলে যাবে অথবা পাঁচ ওয়াক্তের বেশী নামায ক্বাযা হলে অথবা পূর্বের ক্বাযা নামাযের কথা ভুলে গেলে এই তারতীব রক্ষা করা জরুরী নয়। তখন ওয়াক্তিয়া নামায আগে পড়লে কোন সমস্যা হবে না।–আদ্দুররুল মুখতার ২/৬৫-৬৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২১-১২৪