প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম হযরত আমার প্রশ্নগুলো হলো:- ১/হযরত আরবী রাতগুলো যেমন শবে বরাত-কদর-জুম্মা ইত্যাদি আগের দিন রাতে হয় কেন? হিসেবে দিন শেষে রাত পরে না হওয়ার কথা? যেমন শুক্রবার রাত কি বৃহ:বার রাতে পড়ে? শুক্রবারের রাত না জুম্মা যেদিন পড়বে তার পরে হওয়ার কথা? ২/কবর যিয়ারতের উত্তম পদ্ধতি কোনটি? সূরা সিরায়াল কিভাবে করবো? আর যত সূরা পড়বো একদম শেষে কি দূরূদ পড়বো? ৩/ হযরত নামাযের মধ্যে যদি মনে হয় আমি এক রাকাআত বাদ দিয়েছি বা ২য় রাকাআতের বৈঠকে বসলাম কিনা? সন্দেহ হলে কি হুকুম আর নিশ্চিত হলে কি হুকুম? নামায আবার পড়তে হবে? কখন সিজদায়ে সাহু দিবো? কখন সিজদায়ে সাহু দিতে হয়?
উত্তর :ওয়া আলাইকুমুস সালাম
(১) শরীয়াতে রাত আগে আসে এবং দিন পরে আসে। কেননা আল্লাহ্ তাআলা রাতকে আগে সৃষ্টি করেছেন।– তাফসীরে ইবনে কাসীর ৫/৩৩৯ (সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৩৩)
(২) কবর যিয়ারতের পদ্ধতি হল প্রথমে কবরের কাছে গিয়ে কিবলার দিকে পিঠ দিয়ে এবং কবরের দিকে মুখ করে দাঁড়াবে অতঃপর এভাবে সালাম দিবে-
السَّلَامُ عَلَيْكُمْ يَا أَهْلَ الْقُبُورِ ، يَغْفِرُ اللَّهُ لَنَا وَلَكُمْ ، أَنْتُمْ سَلَفُنَا وَنَحْنُ بِالْأَثَرِ
এরপর কুরআনের আয়াত, সূরা( বিশেষভাবে সূরা ফাতিহা, ইখলাছ, ইয়াসিন, মুলক, আয়াতুল কুরসী ইত্যাদি যতটুকু সম্ভব) পড়বে।এক্ষেত্রে কোন সিরিয়াল রক্ষা করা জরুরী নয়। ইচ্ছা করলে যে কোন সময় কয়েকবার দূরূদ শরীফও পড়া যায়। অতঃপর এগুলোর ছাওয়াব কবরবাসীদের নামে বখশে দিবে। ছাওয়াব পৌঁছানোর জন্য হাত তোলার কোন প্রয়োজন নেই। তবে একান্ত তুলতে হলে কিবলার দিকে মুখ করে কবরের দিকে পিঠ করে নিবে।–রদ্দুল মুহতার ২/২৪২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫০।
(৩) যদি নামাযের রাকাআত নিয়ে সন্দেহ হয় আর এমনটি কদাচিৎ বা কম হয় তবে পুনরায় নতুন করে নামায পড়তে হবে। আর যদি প্রায়ই বা ঘন ঘন হয় তবে এক বা দুই রাকাআত নিয়ে সন্দেহ হলে দেখবে কোন একদিকে প্রবল ধারণা হয় কিনা? যদি হয় তবে তাই গ্রহন করবে।আর প্রবল ধারণা না হলে কমটিকে (অর্থাৎ এক রাকাআত) ধরে নামায আদায় করবে এবং প্রতি রাকাআতে বৈঠক করবে। অতঃপর শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু দিয়ে নামায শেষ করবে। অনুরূপভাবে যদি দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাকাআত বা তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাআত নিয়ে সন্দেহ হয় তবে একই হুকুম। অর্থাৎ কমটিকে (পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাকাআত) ধরে নিয়ে প্রতি রাকাআতে বৈঠক করবে। অতঃপর শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু দিয়ে নামায শেষ করবে।– আদ্দুররুল মুখতার ২/৯২; ফাতহুল কদীর ১/৫১৮; তাতারখানিয়া ১/৭৪৭।
আর যদি প্রথম বৈঠক করা নিয়ে সন্দেহ হয় তবে সিজদায়ে সাহু করে নামায শেষ করবে।–আদ্দুররুল মুখতার ১/১০৩।
নামাযে কোন ওয়াজিব ভুলে ছুটে গেলে সিজদায়ে সাহু দিতে হয়।– আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৫৬; আল বাহরুর রায়েক ১/৫১৫।