প্রশ্ন : আমি প্রচন্ড পরিমান এ ওয়াসওয়াসায় ভুগছি। সমস্যা অনেক বড়। নামাজের সময় সমস্যা আরও বেশি হয়। কি পরিমান এ যে গুনাহ হচ্ছে আল্লাহ মহান মাফ করুক। ইচ্ছা করে কিছু চিন্তা করি না। আপনা আপনি মাথায় আসে। এ গুনাহ আমি ইচ্ছা করে করতাছি না। শত চেষ্টা সত্যেয় বন্ধ করতে পারছি না। এর পরিত্রান কি? এতে কি আমার মাপফ না পাওয়ার মত অনেক গুনাহ হচ্ছে?-সাইদুল ইসলাম
উত্তর :নামাযের মধ্যে অনিচ্ছাকৃত কোন চিন্তা আসা দোষণীয় নয়।আপনার কর্তব্য হল আপনি চিন্তায় ডুবে যাবেন না।বরং যখনই কোন চিন্তা আসবে আপনি তা থেকে মনকে ঘুরিয়ে নিয়ে নামাযে মনোনিবেশ করবেন।এমনটি যদি নামাযে একশত বারও হয় তবে আপনার নামাযের সামান্যতম ক্ষতি হবে না।
অন্তরে কখনো কোন খারাপ ওয়াসওয়াসা এলে তা (উক্ত কুমন্ত্রণা) সেখানেই শেষ করে আল্লাহ্ তাআলার নিকট বিতাড়িত শয়তান থেকে পানাহ চাবেন। এবং এই দুআ পড়বেন-
آمَنْتُ بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ
এতে আপনার কোন গুনাহ হবে না।
হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে-
قال رسول الله صلى الله عليه و سلم : يأتي الشيطان أحدكم فيقول : من خلق كذا ؟ من خلق كذا ؟ حتى يقول : من خلق ربك ؟ فإذا بلغه فليستعذ بالله ولينته
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, “শয়তান তোমাদের নিকট এসে বলে অমুক কে সৃষ্টি করেছে? অমুক কে সৃষ্টি করেছে? এমনকি সে প্রশ্ন করে বসে তোমার প্রতিপালককে কে সৃষ্টি করেছে? যখন কেউ এ পর্যায়ে পৌঁছে তখন সে যেন তা (উক্ত কুমন্ত্রণা) সেখানেই শেষ করে আল্লাহ্ তাআলার নিকট (বিতাড়িত শয়তান থেকে) পানাহ চায়।–সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ৩২৭৬।
অন্য একটি রেওয়ায়েতে আছে, সে যেন তখন নিম্নোক্ত দুআটি পড়ে-
آمَنْتُ بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ
(সুনানে আবূ দাউদ,হাদীস নং ৪৭২৩)
অন্তরে আগত অহেতুক ওয়াসওয়াসার (কুমন্ত্রণা) প্রতি ভ্রূক্ষেপ করবেন না। শয়তান ওয়াসওয়াসা দিয়ে মানুষকে আমল থেকে বিরত রাখতে চায়। এতে আপনার ওয়াসওয়াসা আস্তে আস্তে চলে যাবে ইনশাআল্লাহ।
আর ওয়াসওয়াসা আসাটাও ঈমানের একটি আলামত। কাজেই ঘাবড়াবেন না। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে একদা একদল সাহাবায়ে কেরাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এসে বললেন,আমরা আমাদের অন্তরে এমন কথা অনুভব করি যা আমরা মুখে আনতে ভয় পাই। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন তোমরা কি আসলেই অন্তরে এমন কথা অনুভব কর। তারা বললেন হ্যাঁ। তিনি বললেন এটাই তো স্পষ্ট ঈমান (এর আলামত)। –সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৫৭।