প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম দয়া করে হেল্প করুন। আমাদের স্বামী স্ত্রীর মাঝে ঝগড়ার সময় স্বামী আমাকে ৩ তালাক দিয়েছিল গত এক ১ বছর আগে। তারপর ঝগড়া মিটে গেলে স্বামী তালাক অস্বীকার করে, আর বলে সে তো তালাক রাগের মাথায় দিয়েছে। তার কিছুদিন পরই জানতে পারি যে, আমি মা হতে চলেছি। তার মানে হচ্ছে তালাকের আগে আমি কনসিভ করেছি। আলহামদুলিল্লাহ ২ মাস হলো কন্যা সন্তানের মা হয়েছি। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো সত্যি কি আমাদের তালাক হয়ে গেছে? আমরা একে অপরের জন্য হালাল না হারাম? তালাক হয়ে গেলে আমাদের করনীয় কি? যেহেতু ছোট বেবি আছে। জরুরি ভাবে উত্তর দিলে উপকৃত হবো।

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম
প্রত্যেক বিবাহিত ও বিবাহিচ্ছুক নর-নারীর জন্য বিবাহ-তালাক সংক্রান্ত জরুরী মাসআলা মাসায়েল জানা অত্যন্ত জরুরী। এ ব্যাপারে অজ্ঞ থাকার কারণে অনেকক্ষেত্রে যেমনিভাবে দুনিয়ার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে তেমনিভাবে আখেরাতের কঠিন আযাবেরও কারণ হয়।
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার উপর তিন তালাকে মুগাল্লাজা পতিত হয়ে আপনি আপনার স্বামীর জন্য স্থায়ীভাবে হারাম হয়ে গিয়েছেন। শরয়ী হালালাহ ব্যতীত আপনাদের জন্য ঘর সংসার করা সম্পূর্ণ নাজায়েয ও হারাম। শরয়ী হালালার সূরত হল, স্ত্রীর ইদ্দত পার হবার পর অন্য কোন পুরুষ তাকে বিবাহ করবে। এরপর তাদের মাঝে শারীরিক সম্পর্ক (মেলামেশা) হওয়ার পর সে স্বেচ্ছায় স্ত্রীকে তালাক দিবে। অতঃপর স্ত্রীর ইদ্দত পার হবার পর প্রথম স্বামী চাইলে তার সাথে নতুনভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে। আর তালাকের আগেই আপনি গর্ভবতী হয়ে থাকলে আপনার ইদ্দতের মেয়াদ হবে সন্তান জন্ম নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত।
উল্লেখ্য যে, তালাক রাগের মাথায়, হাঁসতে হাঁসতে, ঠাট্টা করত যেভাবেই দেওয়া হোক না কেন তা পতিত হয়। তাছাড়া ঠাণ্ডা মাথায় কেউ তালাক সাধারণত দেয় না। রাগারাগি হলেই কেবল অধিকাংশ ক্ষেত্রে তালাক দিয়ে থাকে। হাদীস শরীফে আছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
ثَلاَثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ النِّكَاحُ وَالطَّلاَقُ وَالرَّجْعَةُ
অর্থঃ তিনটি জিনিস এমন রয়েছে, গুরুত্ব সহকারে বললেও সংঘটিত হয় এবং ঠাট্টা করে বললেও সংঘটিত হয়। বিবাহ, তালাক ও (এক বা দুই তালাক দেওয়া স্ত্রীকে) ফিরিয়ে নেওয়া।-সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং ২১৯৬; সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং ১১৮৪
সুত্রসমূহঃ সূরা বাকারাহ, আয়াত ২৩০; সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ৫৭৯২; রদ্দুল মুহতার ৩/২৯৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৭৩; মাজমূআতুল ফাতাওয়া ২/৬৮

Loading