প্রশ্ন : আমি একটি মাসআলা জানতে চাই? সেটা হল মহিলাদের জন্য কবর যিয়ারত করা জায়েয আছে কিনা?
উত্তর :এ বিষয়ে উপমহাদেশের বিখ্যাত ফকীহ মাওলানা মুহাম্মাদ ইউসুফ লুধিয়ানবী (রহঃ) এর বক্তব্য হুবহু তুলে ধরলাম-
“জাহেলী যুগের কবর পূজা সম্পর্কে ঘৃণা সৃষ্টির জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে উম্মতকে কবরের কাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন। এরপর যখন ঐ সময়ের রসম-রেওয়াজ ভালোভাবে দূর হল তখন তিনি কবর-যিয়ারতের অনুমতি দিয়ে বলেছেন-
كنت نهيتكم عن زيارة القبور، فزوروها، فإنها تزهد في الدنيا وتذكر الآخرة.
আমি তোমাদের কবর-যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। (এখন ঐ নিষেধ মানসূখ করা হচ্ছে) এখন তোমরা কবর যিয়ারত করতে পার। কারণ তা দুনিয়ার মোহ দূর করে এবং আখিরাতকে মনে করিয়ে দেয়। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৫৭১; মিশকাত পৃ. ১৫৪
সুতরাং কবরস্থানে যাওয়ার অনুমতি আছে। তবে দুটি বিষয়ে কিছু মতভেদ রয়েছে।
এক. এ অনুমতি নারী-পুরুষ সবার জন্য, না শুধু পুরুষের জন্য। কিছু মনীষীর মতে নারীদের অনুমতি নেই। কারণ এক হাদীসে আবু হুরায়রা রা. বলেন-
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم لعن زوارات القبور
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর যিয়ারতকারী নারীদের উপর অভিসম্পাত করেছেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৮৪৪৯; জামে তিরমিযী, হাদীস ১০৫৬; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৫৭৫; মিশকাত পৃ. ১৫৪
আর কেউ কেউ বলেন, এটি অনুমতির আগের। এখন পুরুষের মতো নারীদেরও কবর যিয়ারতের অনুমতি আছে।
নারীদের নিষেধ করার তাৎপর্য এই যে, ইলম ও সবরের স্বল্পতার কারণে তারা ওখানে গিয়ে অস্থিরতা, কান্নাকাটি এবং বিদআত ও গায়রে শরয়ী আচরণ থেকে বিরত থাকতে পারে না। যেহেতু তাদের ওখানে যাওয়ায় ফিতনার আশঙ্কাই প্রবল তাই তাদেরকে বিশেষভাবে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং যদি কোনো নারী ওখানে গিয়ে কোনো প্রকারের বিদআত ও গায়রে শরয়ী কার্যকলাপে লিপ্ত না হন তাহলে তার অনুমতি আছে। তবে বৃদ্ধা নারীরা যেতে পারেন, যুবতীদের না যাওয়াই ভালো।-ফাতাওয়ায়ে শামী খ. ২ পৃ. ২৪২, নতুন মুদ্রণ, মিশর”
(ইখতিলাফে উম্মাত আউর সীরতে মুস্তাকীম, পৃষ্ঠা ৬৪, ৬৫)