প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমি একটি হাদীসের ব্যাখ্যা জানতে চাই? হাদীসে আছে ১। অন্যায় কাজ দেখলে হাত দ্বারা প্রতিহত করতে। ২। মুখ দ্বারা প্রতিহত করতে। ৩। মনে মনে ঘৃনা করতে।এরপর ঈমানের কোন স্তর নেই। উক্ত হাদীসে ১ নং ঈমানদার কিভাবে হওয়া যাবে? যেমন আমাদের এলাকায় গানবাজনা হয় আমি যদি হাত দিয়ে বাধা দিতে গেলে মারামারি বাজবে। কিছুদিন আগেও পত্রিকায় এসেছে একজন গান বাজাতে নিষেধ করায় তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। আমাদের পাশের এলাকাতেও কিছুদিন আগে একজন হুজুর দলীও গান বাজনাতে বাধা দেয়ায় তাকে পুলিশে ধরে নিয়ে গেছে। এই ক্ষেত্রে করনীয় কি?
উত্তর :ওয়া আলাইকুমুস সালাম
হাদীসটির অর্থ হল, কেউ কোন গুনাহের কাজ দেখলে সরাসরি হাত দ্বারা প্রতিহত করবে যদি তার সামর্থ্য থাকে। যেমন মদ ফেলে দিবে, বাদ্যযন্ত্র ভেঙ্গে দিবে, চোর ডাকাত থেকে মাল এনে মালিককে ফিরিয়ে দিবে ইত্যাদি। সামর্থ্য থাকার অর্থ হল সে উক্ত ব্যক্তি থেকে শক্তিশালী হবে এবং সেখানে কোন ফেতনার আশংকা থাকবে না। আর যদি সরাসরি হাত দ্বারা প্রতিহত করার সামর্থ্য না থাকে তবে জবান দ্বারা প্রতিহত করার চেষ্টা করবে। অর্থাৎ মুখে তাকে নিষেধ করবে, কুরআনের আয়াত তিলাওয়াত করে শুনাবে, এ ব্যাপারে কুরআন হাদীসে কোন ভীতি প্রদর্শন থাকলে তা শুনাবে, ওয়াজ নসীহাত করবে ইত্যাদি। আর যদি সে জবান দ্বারা গুনাহের কাজের পরিবর্তন বা প্রতিবাদের সামর্থ্য না রাখে তবে অন্তর দ্বারা চেষ্টা করবে। অর্থাৎ অন্তর দ্বারা উক্ত কাজকে ঘৃণা করবে। এবং অন্তরে গুনাহকারী ব্যক্তিকে পরিবর্তনের ফিকির করবে। কাজেই এটাও একপ্রকার অভ্যন্তরীণভাবে অসৎ কাজ থেকে বাঁধা প্রদান হবে। কেননা হাত ও জবান দ্বারা বাঁধা দেওয়ার সামর্থ্য না থাকার ক্ষেত্রে এটাই তার সামর্থ্যের মধ্যে রয়েছে। আর এটা ঈমানদারদের সর্বনিম্ন স্তর। কাজেই কেউ সামর্থ্য না থাকার দরুন যদি হাত ও জবান দ্বারা বাঁধা না দেয় অথবা বাঁধা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় রকমের ফেতনার আশংকা দেখে এবং অন্তরে তা ঘৃণা করে ও প্রতিকারের ফিকির করে সেও মুমিন।{ইমাম নববী, শরহে মুসলিম ২/৩১; মিরকাতুল মাফাতীহ ১৫/৩ (শামেলা)}
উপরোক্ত ব্যাখ্যা থেকে আপনার উত্তর পেয়ে যাওয়ার কথা।