প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছেন। আমি নিম্নোক্ত কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে জানতে চাই? উত্তর প্রদানের নিমিত্তে কৃতজ্ঞ থাকিব। আমার মা ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় চাকুরী করেন। তিনমাস পরপর ‘মাসে’ আড়াই হাজার টাকা করে সরকারী অনুদান পান। উক্ত মাদ্রাসায় এনজিও থেকে বিস্কিট এবং উপবৃত্তি দেয়া হয়। এক্ষেত্রে আমার প্রশ্ন হলো, ১। শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের প্রদান পূর্বক কিছু বিস্কিট নিজেরা নিতে পারবেন কিনা। ২। উপবৃত্তির টাকা ছাত্রছাত্রীদের প্রদানপূর্বক নিজেরাও একাউন্ট খোলে উঠালে সেটা হালাল হবে কিনা? যেহেতু তারা বেতন পান না আবার বিনাবেতনে নিয়মিত পরিশ্রম করেন। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য উপজেলা শিক্ষা অফিসের একজন কর্মকর্তার সাথে এবিষয়ে কথা বললে তিনি শিক্ষকদের উপবৃত্তির কিছু টাকা নেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি করেননি! এক্ষেত্রে শরীআতের বিধান কি? ৩। আমি জানি, নামায কালাম বাদ দিয়ে অলস বসে থেকে ক্রিকেট খেলা দেখা নাজায়েয। তবে বিশ্বকাপ/দেশের খেলা যখন হয় তখন নামায/জিকির ঠিক রেখে টেলিভিশনের সাউন্ড অফ রেখে, বিজ্ঞাপন বিরতির সময় টিভির দিকে চোখ না রেখে অল্পসময়/ শেষের দু’চার অভার খেলা দেখা যাবে কি (উদ্দেশ্য যদি দেশপ্রেম হয়!)? কিংবা ক্রিকবাজ, ক্রিকইনফোর মতো স্পোর্টস পোর্টালগুলোতে স্কোর আপডেট দেখা যাবে কি? নচেৎ, ক্রিকেটটাকে অনুসরণ করাই কি হারাম/নাজায়েয হবে? ৪। পিসিতে ফিফা গেম খেলা কি হারাম হবে? আমি যদি মিউজিক অফ করে সামান্য সময়ের জন্য খেলি নামায বাদ না দিয়ে! যদি হারাম হয় তার স্বপক্ষে মা’সালা জানতে চাই। সম্মানিত হযরত, আশাকরি আমার উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর জবাব দিয়ে বাধিত থাকিবেন। তাহলে খুবই কৃতার্থ থাকিব। জাযাকাল্লাহ্ খাইরান।
উত্তর :ওয়া আলাইকুমুস সালাম
১+২। আসলে এক্ষেত্রে বিস্কুট ও উপবৃত্তি দাতাদের নীতিমালা ও দৃষ্টিভঙ্গিই মূল। তাদের পক্ষ থেকে যদি এই অনুমতি দেওয়া থাকে যে, বাচ্চারা বিস্কুট ও উপবৃত্তি নেওয়ার পর শিক্ষক শিক্ষিকাগণও নিতে পারবেন বা যা ইচ্ছা করতে পারবেন তবে জায়েয অন্যথায় নয়।
৩। দেখুন আপনার এই খেলা দেখার অনুমতি দেওয়া প্রকারান্তে টেলিভিশন ক্রয়-বিক্রয়ের অনুমতি দেওয়ার নামান্তর। আপনিই বলুন বর্তমান প্রেক্ষাপটে টেলিভিশনের বৈধভাবে ব্যবহারের কোন সুযোগ আছে কি? এর সাথে কি পরিমাণে উলঙ্গপনা ও বেহায়াপনা সম্পৃক্ত তা কি বলার অপেক্ষা রাখে? তাছাড়া বিজ্ঞাপন বাদ দিলেও খেলার মাঝে সুন্দরী তরুণীদের অশালীন ভঙ্গিতে প্রদর্শন কি এড়ানো সম্ভব? সময় অপচয়ের প্রসঙ্গ না হয় বাদই দিলাম। এই তো গত ফিফা ওয়ার্ল্ডকাপে পত্রিকায় শিরোনাম হল পাকিস্তানের এক সুন্দরী তরুণী। কি হিসেবে? তিনি নাকি পুরো ওয়ার্ল্ডকাপের শ্রেষ্ঠ আবেদনময়ী নারী। লা হাউলা ওয়ালা কুউয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। খেলার সাথে আবেদনময়ী নারীর কি সম্পর্ক।
এ বিষয়ে আমাদের অন্যতম মুরব্বী মাউলানা আব্দুল মালেক সাহেব (দাঃবাঃ) এর একটি প্রশ্নোত্তর হুবহু তুলে দিলাম যা মার্চ ২০১১ তে মাসিক আলকাওসারে প্রকাশ পেয়েছিল-
“প্রশ্ন : আমি একজন সাধারণ মুসলিম। সকল গুনাহ ও গর্হিত কাজ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করি। খেলাকে কেন্দ্র করে যেসব পাপাচার হয়ে থাকে তার কোনোটার সাথেই আমার সর্ম্পক নেই। এমনকি খেলাকে শুধু খেলা হিসেবেই বিবেচনা করি, এটাকে যিন্দেগীর মাকসাদ মনে করি না। এ অবস্থায় আমার জন্য খেলা দেখা জায়েয হবে কি?
উত্তর : অন্তত পর্দাহীনতার গুনাহ ছাড়া বর্তমান যুগে খেলা দেখা কিভাবে সম্ভব? এরপরও যদি আপনার কথা মেনে নেওয়া হয়, তবুও এখন দুই কারণে কারো জন্য খেলা দেখা বৈধ নয়।
১. এতে সময়ের অপচয় হয়। আর সময়ের অপচয় করা গুনাহ। হাশরের ময়দানে যেসব প্রশ্নের জবাব দেওয়া ছাড়া কদম নড়ানো যাবে না তার একটি হল সময়। কোথায় কীভাবে তা ব্যয় হয়েছে-এ সম্পর্কে জবাব দিতে হবে। যদি দ্বীন বা দুনিয়ার কোনোও কল্যাণে তা ব্যয় না হয়ে থাকে তাহলে জবাব দেওয়া সম্ভব হবে না।
২. খেলা এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং এর সাথে যত পাপাচার ও বেহায়াপনা যুক্ত হয়েছে তাতে আল্লাহর কাছে দায়মুক্তির জন্য অবশ্যই কথা ও কাজে খেলার সাথে সর্বপ্রকার সম্পর্কহীনতা পরিষ্কারভাবে প্রকাশ করা আবশ্যক। যে কারো দল ভারি করে সে তাদের মধ্যেই গণ্য হয়।
তাই যারা আল্লাহকে ভয় করি, আখিরাতের ফিকির করি, আল্লাহর সামনে হাজির হওয়ার উপর ঈমান রাখি আমাদেরকে অবশ্যই এ খেলা দেখা থেকে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ তাওফীক দান করুন। আমীন”।
আল্লামা তাকী উসমানী সাহেব (দাঃবাঃ) বিশ্বকাপ সম্পর্কে একটি লেখা লিখেছিলেন প্রায় চার যুগ পূর্বে। লেখাটিও হুবহু তুলে ধরলাম-
“খেল ইয়া মাকসাদে যিন্দেগী
শাইখুল ইসলাম মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ তকী উসমানী
গত মাসে পাকিস্তান ও ভারতে যৌথভাবে বিশ্বকাপ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় দেড় মাস যাবৎ এটাই ছিল সবার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু। সর্বত্র আলোচনার বিষয়বস্ত্ত ছিল খেলা এবং যেখানেই কিছু লোক একত্র হয়েছে সেখানেই খেলার কথা অবধারিতভাবে উঠে এসেছে। দেশের মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে শ্রমিক-কর্মচারী পর্যন্ত অধিকাংশ মানুষ খেলার সর্বশেষ সংবাদ জানার জন্য, টেলিভিশনের পর্দায় খেলা দেখার জন্য এবং রেডিওতে ধারাবিবরণী ও আলোচনা-পর্যালোচনা শোনার জন্য শুধু ব্যস্তই ছিল না; বরং মগ্ন ও সমাহিত ছিল। যেন এটাই এখন গোটা জাতির একমাত্র কাজ। যেন এই দেশের কোথাও কোনো সমস্যা নেই এবং দেশের চূড়ান্ত উন্নতি নিশ্চিত হয়ে গেছে। সুতরাং জাতির সামনে বিনোদন ও খেলাধুলায় মত্ত হওয়া ছাড়া আর কোনো কাজ নেই।
এখনও মানুষের মস্তিষ্ক হতে বিগত দেড় মাসের খেলার নেশা দূর হয়নি। এরই মধ্যে আজকের খবরের কাগজে বলা হয়েছে-ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল আসন্ন পাকিস্তান সফরে তিনটি টেস্ট সিরিজ ছাড়াও তিনটি এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে। (রোযনামায়ে জঙ্গ, ১৪/১১/৮৭)
মোটকথা, আরো দেড় মাস গোটা দেশ, বিশেষত তরুণশ্রেণী পুনরায় ক্রিকেট জ্বরে আক্রান্ত হবে। আরো শোনা যাচ্ছে যে, এই দ্বিপাক্ষিক ম্যাচ শেষ হওয়ার পর পাকিস্তান ক্রিকেট দল বিদেশ সফরে রওনা হবে।
এখানে লক্ষণীয় বিষয় এই যে, যেসব খেলাধুলা সুস্থতা ও দৈহিক সক্ষমতার পক্ষে সহায়ক তা মৌলিকভাবে নাজায়েয বা দোষণীয় নয়। কিন্তু প্রত্যেক বিষয়েরই একটা সীমারেখা আছে, যা লঙ্ঘন করা হলে সাধারণ মুবাহ ও বৈধ কাজ তো দুরের কথা, নেক আমলও শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয থাকে না। বরং আপত্তি ও প্রতিবাদের উপযুক্ত হয়ে যায়। বর্তমানে খেলাধুলার অবস্থা এই যে, তা আর খেলাধুলা নয়; বরং জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে পরিণত হয়েছে। এবং জীবনের বহু প্রয়োজন ও বাস্তব সমস্যার চেয়েও তা বহু গুণ বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে খেলার পিছনে গোটা জাতির মূল্যবান সময় যেভাবে বিনষ্ট হচ্ছে তার নিন্দা ও আফসোসের ভাষা আমার জানা নেই।
সময়ের গুরুত্ব সম্পর্কে তো কারো দ্বিমত নেই। শুধু ইসলামই নয়, পৃথিবীর সকল ধর্ম, এমনকি নাস্তিক ও বস্ত্তবাদি দার্শনিকরাও সময়ের গুরুত্ব ও সময়কে কাজে লাগানোর শিক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু এইসব খেলাধুলার সময়ে আমাদের অবস্থা দেখে মনে হয় যে, আমাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যহীন ও অপ্রয়োজনীয় জিনিসের নাম সময়। সুতরাং তা ব্যয় করার জন্য খেলা দেখা ও খেলা নিয়ে অহেতুক গালগল্পে লিপ্ত হওয়ার চেয়ে উত্তম ক্ষেত্র আর কিছুই নেই।
আশ্চর্যের বিষয় এই যে, ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন কোনো কোনো জায়গায় পুরোদস্ত্তর সরকারী ছুটি ঘোষণা করা হয়। যেখানে ছুটি ঘোষণা করা হয়নি সেখানেও কাজ-কর্মে ছুটির আবহ বিরাজ করে, অফিস-আদালত থেকে শুরু করে কলেক-ভার্সিটি পর্যন্ত সর্বত্র সবার দৃষ্টি থাকে টিভির মনিটরে এবং মন পড়ে থাকে খেলার মাঠে। এ অবস্থায় অফিসের দায়িত্বপূর্ণ কাজকর্মে এবং শ্রেণীকক্ষের অধ্যয়ন ও অধ্যাপনার মতো কাজে মনই বা কীভাবে বসবে আর কীভাবে একাগ্রতাই সৃষ্টি হবে? অথচ মনোযোগ ও একাগ্রতা ছাড়া এসব কাজ সুসম্পন্ন করা কি কখনো সম্ভব? আমাদের কিশোর ও তরুণশ্রেণী যারা এখনো খেলাধুলা ও জীবনের বাস্তব প্রয়োজনের মাঝে পার্থক্য করার যোগ্যতা অর্জন করেনি তাদের মন-মস্তিক্ষে যদি দিনরাত ব্যাট-বলের শাসন চলতে থাকে তাহলে তারা লেখাপড়ার মতো রসকষহীন বিষয়ে কিভাবে মনোযোগ দেবে? উপরন্তু তারা যখন বয়স্কদেরকেও সব কাজকর্ম ছেড়ে খেলা দেখায় মগ্ন দেখে এবং এটাই তাদের গল্পগুজবের একমাত্র বিষয় হয় তখন তো তাদের কচিমনে আর কোনো দ্বিধা-সংশয় অবশিষ্ট থাকে না এবং এর ক্ষতিকর দিকগুলো তাদের উপলব্ধি থেকে সম্পূর্ণ বিদায় নিয়ে যায়।
এখানেই শেষ নয়, সরকার ও জনসাধারণ উভয় পক্ষের কাছে খেলোয়াড়দের যে মর্যাদা ও গ্রহণযোগ্যতা এবং মিডিয়া ও গণমাধ্যমে তাদের যে প্রচার ও প্রশংসা ফুটে উঠে তা জাতির শিশু-কিশোরদের চরমভাবে বিভ্রান্ত করে। কারণ এ ধরনের মূল্যায়ন তো দেশের শীর্ষস্থানীয় গবেষক-বিজ্ঞানী এবং মেধাবী কোনো সমাজ-সংস্কারকের ভাগ্যেও কখনো জোটে না। কৃতী খেলোয়াড়ের একেকটি এ্যাকশনের জন্য লাখ লাখ টাকার পুরস্কার দেয়া হয়, ম্যাচ সিরিজে বিশেষ কৃতিত্বের জন্য থাকে গাড়ি-বাড়ি ও নগদ টাকার পুরস্কার। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ ও পদস্থ কর্মকর্তারা সারা দিন বসে বসে এইসব কর্মকান্ড দেখতে থাকেন এবং নিজেদের হাতে তাদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। তো শিশুরা যখন দেখে যে, লেখাপড়ার পরিবর্তে যারা খেলাধুলাকে জীবনের লক্ষ্য বানিয়েছে তারাই বর্তমান সময়ের তারকা তখন লেখাপড়া ও ভালো হয়ে চলার উপদেশ তাদের কাছে কপটতা বলে মনে হয়। এক্ষেত্রে তাদেরকে কতটা দোষ দেওয়া যায়?
এ তো হল সময়ের অপচয় এবং মেধা ও প্রতিভা ধ্বংসের দিক। এরপর যদি এইসব টুর্ণামেন্টের আর্থিক ক্ষতি সম্পর্কে চিন্তা করা হয় তবে সেটাও কম দুঃখজনক নয়। একেকটি স্টেডিয়ামের নির্মাণ ও সংস্কারের পিছনে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয় এবং খেলার আয়োজন ও সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য যে বাজেট রাখা হয় তা কি এই দরিদ্র দেশের জন্য চরম দুর্ভাগ্যজনক নয়?
এখন পৃথিবীর অনেক দেশেই খেলাধুলার প্রতি আকর্ষণ বাড়ছে। কিন্তু যে উন্মাদনা ও উন্মত্ততা আমাদের দেশে দেখা যায় তা পৃথিবীতে আর কোনো দেশে দেখা যায় কি না সন্দেহ। এই বিংশ শতাব্দীর শেষেও পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ আছে, যেগুলোর নাম খেলাধুলার সাথে কখনো শোনা যায়নি; বরং পৃথিবীর অধিকাংশ দেশই সম্ভবত এ বৈশিষ্ট্য নিয়েই চলে। অথচ তারাও তাদের শিশু-কিশোরদের শারীরিক সুস্থতার বিষয়ে সজাগ। খেলাধুলাকে জীবন-মরণের বিষয় না বানিয়েও তারা শুধু বিংশ শতাব্দীতে জীবিতই থাকেনি, উন্নতি ও সমৃদ্ধির দিক থেকে তারা আমাদের চেয়েও অগ্রগামী। পৃথিবীর এক বৃহৎ রাষ্ট্র চীনের কথাই ধরুন, শরীর চর্চা ও দেহ সুরক্ষার কলা-কৌশলের প্রতি যতটা গুরুত্ব এদের মধ্যে পাওয়া যায় অন্তত আমি তা অন্য কোনো দেশের নাগরিকদের মধ্যে দেখতে পাইনি। কিন্তু এটাকেও তারা শুধু ব্যায়াম ও শরীর চর্চার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছে, একে এমন ব্যাপক উন্মাদনার অনুসঙ্গ হতে দেয়নি। যা আবাল-বৃদ্ধের মন-মস্তিষ্ককে আচ্ছন্ন করে রাখবে এবং তাদেরকে মৌলিক দায়িত্ব-কর্তব্য হতে উদাসীন বানিয়ে দেবে।
একথাগুলির উদ্দেশ্য-আল্লাহ না করুন-শুধু সমালোচনা ও তিরস্কার করা নয়; বরং পূর্ণ দরদের সাথে দেশের সরকার ও জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন করতে চাই যে, ম্যাচপ্রীতি এখন সীমা অতিক্রম করেছে এবং এর সুদূর প্রসারী ক্ষতি এমন যেকোনো ব্যক্তিই উপলব্ধি করতে পারবে, যার মধ্যে সামান্যতম বিবেক-বুদ্ধি অবশিষ্ট আছে। আল্লাহর ওয়াস্তে চিন্তা করুন! এভাবে আমরা আমাদের জাতিকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছি? আমরা এমন একটি জাতি, যারা অসংখ্য সমস্যার ঘূর্ণিপাকে আটক পড়ে আছি এবং নিজেদের প্রয়োজন পূরণে বাইরের দেশের সাহায্যের মুখাপেক্ষী, যেসব সাহায্য দেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় মর্যাদার মূল্যে কেনা হয়। আমাদের প্রতিটি দিন একেকটি নতুন সমস্যা নিয়ে উপস্থিত হয়। শিশু-কিশোরদের সহীহ তালীম-তরবিয়তের ব্যবস্থা নেই, আদালতে অমীমাংসিত মামলার স্ত্তপ জমে আছে, চারদিকে শত্রুরা হা করে আছে।
আজ এই জাতির প্রয়োজন খেলোয়াড়ের নয়, মেধাবী মানুষ ও দেশ গড়ার সৈনিকের। অথচ আমরা এমন এক রঙ তামাশার পরিবেশ সৃষ্টি করেছি যে, গায়ক-নায়ক ও খেলোয়াড়রাই আজ হয়ে গেছে নতুন প্রজন্মের আদর্শ”।–সূত্রঃ মাসিক আলকাওসার মার্চ ২০১১
৪। না, খেলা যাবে না। আসলে শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে আপত্তিকর কোন কোন জিনিস এসব গেমসের মধ্যে রয়েছে। কোন কিছু না থাকলে অন্তত সময়ের অপচয় তো রয়েছেই। আর অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতার আলোকে দেখা গিয়েছে এগুলো ধীরে ধীরে নেশা পর্যন্ত নিয়ে যায়। আর ফিফা গেমস এ তো ছবিও থাকবে। সারকথা এগুলো পরিত্যাজ্য। কোন মুমিন এগুলোতে মত্ত হতে পারে না। নিম্নোক্ত লিঙ্কে আপনি আরো জানতে পারবেন-
http://muftihusain.com/ask-me-details/?poId=1425