প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম। আমার প্রশ্ন : আমার স্ত্রীকে বিবাহের সময় ৩০০০০০/- (তিন লক্ষ) টাকা মোহরানা নিধারণ করে বিবাহ কার্য সম্পাদন হয়। তখন স্বর্ণ বাবদ ৫০০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা লিখে দেয়া হয়। কিন্তু তাকে প্রায় ঐ সময়ের মূল্য হিসাবে ২৫০০০০/- টাকার স্বর্ণ দেয়া হয়েছিল। পরবর্তিতে যাকাত আদায়ের সুবিধার্থে তাকে ঐ স্বর্ণের পরিপূর্ণ মালিক করে দেয়া হয়। তাই তার থেকে পূনরায় ঐ স্বর্ণ তো চাইতে পারছি না। যদি চাওয়া যায় তবে তাও জানাবেন। আর বেশ কিছু দিন যাবত আপনার সাইটি পড়ে বুঝতে পারছি যে, স্ত্রীর মোহর আদায় করা উচিত। কিন্তু আমি একজন সাধারণ মানুষ। একটি ছোট চাকুরী করি। বেতন ১৪০০০/- (চৌদ্দ হাজার) টাকা। কিন্তু আব্বা আম্মার সম্মতিতে এবং স্ত্রী পক্ষের লোকের কথায় তিন লক্ষ টাকা মোহরানা ধার্য করেছিলাম। তখন তো বুঝি নাই। আর এত টাকা তো দুরের কথা আমার উপর কখনো যাকাত-ই ফরজ হয় না। এখন কি করণীয় অনুগ্রহ করে জানাবেন? কারণ আমার ভয় হচ্ছে যদি এই বিষয়টি ঝুলন্ত অবস্থায় মৃত্যু আসে তবে হাসরের মাঠে স্ত্রীকে হয়তো জবাব ও সাওয়াব সবই দিয়ে নিজে জাহান্নামে যেতে হবে। অনুগ্রহ করে ইমাম আবু হানীফার (রঃ) এর মত অর্থাৎ তিনি যেমন সব সময় সহজটা অনুসরণ করতেন ঠিক তেমনি করে সহজ পদ্ধতি ও পরামর্শ আশা করছি। যাতে আমার মোহরানা মাফ চাওয়া বা কোন পদ্ধতিতে দেয়ার দ্বারা মাফ হয়। জাযাকাল্লাহু খাইরন।
উত্তর :ওয়া আলাইকুমুস সালাম
মোহর বর্তমানে আমাদের নিকট একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। এটা ধার্যের সময় যোগ্যতা, সামর্থ্য কোন কিছুর দিকেই লক্ষ্য রাখা হয় না। অধিকাংশ মানুষ তো এটা দেওয়ার নিয়তই করে না। যার কারনে মোহর ধার্য ও দেওয়ার সামর্থ্যের মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধান থাকে। অথচ স্ত্রীর মোহর আদায় করা নামায রোযার মতই ফরজ। যা স্পষ্টভাবে আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলে দিয়েছেন। কিন্তু মানুষ এটাকে তামাশার ন্যায় গ্রহন করেছে। আপনি সামর্থ্যের কথা বিবেচনা না করে এতো বড় অঙ্কের মোহরে কেন সম্মত হলেন? এ সম্পর্কে জরুরী ইলম কেন অর্জন করেননি? প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনি তিন লক্ষ থেকে পঁচিশ হাজার টাকা মোহর আদায় করেছেন। বাকী টাকা আপনার যিম্মায় ঋণ রয়েছে। এই ঋণ থেকে মুক্তির দুটি সূরত রয়েছে ১। হয়তোবা আপনি আদায় করে দিবেন অথবা ২। আপনার স্ত্রী সন্তুষ্টচিত্তে তা মাফ করে দিবেন।–সূরা নিসা, আয়াত ৪; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১১৩; আল বাহরুর রায়েক ৩/২৬৩