প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম। আমার বন্ধু তার স্ত্রীকে তিন তালাক দেয়ার পর এক হুজুর থেকে লিখিত ফতোয়া আনে তারা বলে আপনার ১ তালাক হইছে। তারপর সে আবার সংসার শুরু করে। তাদের একজন সারে তিন বছরের আরেকটা দের বছরের বাচ্চা আছে। এর একমাস পর সে আরেকজন হুজুর থেকে জানতে পারে তার স্ত্রী তার থেকে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে এবং তারা অবৈধ সংসার করতেছে। বাকি দুইমাস তারা এক ঘরেই ছিলো কিন্তু সহবাস ছাড়া বাকি সব কিছু স্বাভাবিক নিয়মেই সংসার চলছিলো। এখন অন্য একজনকে হালালাহ এর উদ্দেশ্য না জানিয়ে বিয়ে দেয়া হয় এবং কিছুদিন পর তার কাছ থেকে বুঝিয়ে খোলা তালাকের মাধ্যমে তাদের বিচ্ছেদ ঘটানো যায় তাহলে কি প্রথম স্বামীর জন্য স্ত্রী বৈধ হবে? এখন আমার প্রশ্ন হলো-(ক) ইদ্দতের মাঝে যে তারা সংসার করলো সেটা কি ইদ্দতের সমস্যা হইছে? নাকি সংসার করাটা আলাদা গুনাহ? (খ) দ্বিতীয় স্বামী থেকে বুঝিয়ে তার কাছ থেকে খোলা তালাক আনলে প্রথম স্বামী বৈধ হবে? (গ) আর যদি প্রথম ফতোয়ার উপর নির্ভর করে সংসার করলে কি জায়েজ হবে? হুজুরে নিকট আকুল আবেদন এই সংসারটা বাচানোর জন্য কি করা যায় সে বিষয়ে একটা সহজ রাস্তা বের করে দিবেন। আর লিখিত ফতোয়া কিভাবে আনবো সে বিষয়ে একটু সাহায্য করবেন।
উত্তর :ওয়া আলাইকুমুস সালাম
প্রত্যেক বিবাহিত ও বিবাহিচ্ছুক নর-নারীর জন্য বিবাহ-তালাক সংক্রান্ত জরুরী মাসআলা মাসায়েল জানা অত্যন্ত জরুরী। এ ব্যাপারে অজ্ঞ থাকার কারণে অনেকক্ষেত্রে যেমনিভাবে দুনিয়ার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে তেমনিভাবে আখেরাতের কঠিন আযাবেরও কারণ হয়।
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার বন্ধুর স্ত্রীর উপর তিন তালাকে মুগাল্লাজা পতিত হয়ে তিনি তার স্বামীর জন্য স্থায়ীভাবে হারাম হয়ে গিয়েছেন। শরয়ী হালালাহ ব্যতীত তাদের জন্য ঘর সংসার করা, দেখা সাক্ষাত ও অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা সম্পূর্ণ নাজায়েয ও হারাম। শরয়ী হালালার সূরত হল, স্ত্রীর ইদ্দত পার হবার পর অন্য কোন পুরুষ তাকে বিবাহ করবে। এরপর তাদের মাঝে শারীরিক সম্পর্ক (মেলামেশা) হওয়ার পর সে স্বেচ্ছায় স্ত্রীকে তালাক দিবে। অতঃপর স্ত্রীর ইদ্দত পার হবার পর প্রথম স্বামী চাইলে তার সাথে নতুনভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে।
ক। প্রথম স্বামীর তালাক দেওয়ার পর থেকেই ইদ্দত শুরু হবে। এক্ষেত্রে তালাক দেওয়ার পরে তাদের সংসার করা জায়েয হয়নি। সেজন্য উভয়ে আল্লাহ তাআলার নিকট খালেছভাবে তাওবা করে নিবে।
খ। হ্যাঁ, উপরোক্ত নিয়মে করলে বৈধ হবে।
গ। না, তা জায়েয হবে না।
সুত্রসমূহঃ সূরা বাকারাহ, আয়াত ২৩০; সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ৫৭৯২; রদ্দুল মুহতার ৩/২৯৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৭৩; মাজমূআতুল ফাতাওয়া ২/৬৮