প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম। পূর্বের প্রশ্নের উত্তর পেয়ে উপকৃত হয়েছি। আল্লাহ আপনাকে উভয় জাহানে তাঁর শান অনুযায়ী বদলা দান করুন। এবার আমার প্রশ্ন কুরবানী সংক্রান্ত। যেহেতু সামনে সময় কম তাই দ্রুত জবাব পেলে আমার জন্য ভালো হতো। আমার আব্বা মৃত এবং আমরা ৮ ভাই-বোন। আব্বার সম্পত্তি বন্টন হয় নাই এবং ভাইয়েরা সবাই একই পরিবারভুক্ত; যদিও আমরা দুই ভাই চাকুরী নিয়ে বাড়ির বাইরে পরিবারসহ থাকি আর বোনরা সবাই শশুরবাড়িতে থাকে। আব্বার জমি বন্টন হয় নাই তাই উক্ত সম্পত্তি থেকে কোনো অংশ আমি ভোগ করি না (যখন বাড়িতে গিয়ে থাকি সেটা ব্যাতীত) বরং বাড়িতে প্রতি মাসে টাকা পাঠাই। অর্থাৎ উক্ত জমি থেকে উৎপাদিত আয় আমার জন্য অতিরিক্ত এবং তা বাড়ির দৈনন্দিন খরচে ব্যবহার হচ্ছে। আমার ও আমার অপর ভাইয়ের পাঠানো টাকা এবং ওই সম্পত্তি থেকে উপার্জিত অর্থ সব মিলিয়ে আমাদের গ্রামের বাড়িতে অবস্থিত আমার মা ও দুই ভাই (একজন মাজূর, অপরজন বেকার) এর পরিবারের খরচ চলে। জমিগুলো বর্তমানে শংকরালী দেওয়া অর্থাৎ এক বছরের জন্য টাকা নিয়ে (নগদ এবং বাকি রেখে) কৃষককে খাওয়ার জন্য দেওয়া হয়েছে। আমি আবার আত্মীয়-স্বজনের কাছে লক্ষাধিক টাকা ঋণী যা ধীরে ধীরে পরিশোধ করার চেষ্টাই আছি। কোরবানির দিনগুলোতে আমার নিকট এই বছর নেসাব পরিমান নগদ টাকা / ব্যবসায়িক মাল ইত্যাদি থাকবে না। আমার স্ত্রীর প্রায় ৭ ভরি পরিমান স্বর্ণ আছে কিন্তু কোনো রুপা / একটি টাকাও নেই। আমার স্ত্রীকে আমার শ্বশুর কিছু জিনিস দিয়েছে যার মধ্যে কয়েকটি চেয়ার ও কয়েকটি পাতিল সম্ভবত পুরো বছরে একবারও ব্যবহার হয়না। এমতবস্থায় আমার প্রশ হলো ১) আমার উপর কোরবানি ওয়াজিব হবে কিনা ? আব্বার অবন্টনকৃত জমির আয়ের হিসাব আমরা কখনো নেই না যে আমি সেখানে কত টাকার ওয়ারিশ। ২) ওয়াজিব হলে আমি কি আমার ভাগের জমি বিক্রয় করে / ঋণ পরিশোধ না করে কোরবানি আদায় করবো? ৩) আমার স্ত্রীর উপর কোরবানি কি ওয়াজিব হবে ? আল্লাহর নিকট প্রানভরে দুআ রইলো আপনার জন্য।
উত্তর :ওয়া আলাইকুমুস সালাম
(১+২) প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না।-রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২
(৩) উক্ত পাতিলগুলো পুরো বছরে একবারও ব্যবহার না হলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।-রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২; বাদাউস সানায়ে ৪/১৯৬।
উল্লেখ্য যে, মহিলারা আলমারিতে বা শোকেজে যে সকল কাপড় সাজিয়ে রাখে তা যদি মাঝে মধ্যে পরিধান করে অথবা অন্তত বছরে দু একবার পরিধান করে তবে তা হাজাতে আছলিয়ার মধ্যে গন্য হবে। অন্যথায় তা প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে।