যারা শেয়ার ক্রয় করেন তারা মুলত দুটি উদ্দেশ্যে শেয়ার ক্রয় করে থাকেন। এক. বার্ষিক ডিভিডেন্ড (লভ্যাংশ) গ্রহনের উদ্দেশ্যে স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে শেয়ার ক্রয় করেন। অর্থাৎ কোম্পানির AGM থেকে যে লভ্যাংশ ঘোষণা হবে তাই তাদের উদ্দ্যেশ্য। দুই. যারা শেয়ারকে অন্যান্য পণ্যের মত লাভের আশায় বেচা-কেনা করেন। তাদের উদ্দ্যেশ্য থাকে আশানুরূপ দর পেলেই তার বিক্রি করে দিবে। বাৎসরিক লভ্যাংশ এদের মুখ্য উদ্দেশ্য থাকে না। এরা মুলত Capital Gain করে থাকে।
উপরোক্ত দুই শ্রেণীর শেয়ার হোল্ডারদের যাকাতের হুকুম ভিন্ন ভিন্ন। যারা ক্যাপিটাল গেইন করেন তথা শেয়ারকে অন্যান্য পন্যের মত বেচাকেনা করেন তাদের যাকাতের হুকুম হল, তারা শেয়ারের বর্তমান বাজার দর এর উপর যাকাত আদায় করবেন। ফেস ভ্যালুর উপর নয়। অর্থাৎ যে দিন তার যাকাতের অর্থবছর পূর্ণ হবে সেদিন ঐ শেয়ারের মার্কেট ভ্যালু কত? তার উপর যাকাত আদায় করবে।
আর যারা বার্ষিক লভ্যাংশের উদ্দেশ্যে শেয়ার ক্রয় করে তাদের যাকাতের হুকুম হল তারা প্রথমে কোম্পানীর ব্যালেন্স শিট দেখে কোম্পানীর স্থায়ী ( Fixed Assets) সম্পদ ও যাকাতযোগ্য সম্পদের অনুপাত বের করবেন। কোম্পানির স্থায়ী সম্পদ হল বিল্ডিং, মেশিন, জমি, গাড়ি ইত্যাদি। অর্থাৎ যেগুলো বিক্রি করা হয় না। আর যাকাতযোগ্য সম্পদ হল নগদ টাকা, ব্যবসায়ীক সামগ্রী ও বিভিন্ন পর্যায়ের কাঁচামাল ইত্যাদি। অতঃপর কোম্পানীর মোট সম্পদের ( Assets ) যত পার্সেন্ট যাকাতযোগ্য হয় সে তার শেয়ারের বাজার দরের ততপার্সেন্ট এর যাকাত আদায় করবে। ধরা যাক একটি কোম্পানীর একটি শেয়ারের ফেস ভ্যালু ১০০ টাকা। আজ তার বাজার দর ২০০ টাকা। এদিকে কোম্পানীর স্থায়ী সম্পদ মোট সম্পদের ২০পার্সেন্ট। আর নগদ টাকা, ব্যবসায়ীক পন্য, কাঁচামাল ইত্যদি তথা যাকাত যোগ্য সম্পদ ৮০ পার্সেন্ট। তাহলে যিনি ক্যাপিটাল গেইন এর উদ্দেশ্য শেয়ার ক্রয় করেছেন তিনি আজ যাকাত দিলে ২০০টাকার যাকাত দিবেন। আর যিনি লভ্যাংশের উদ্দেশে শেয়ার ক্রয় করেছেন তিনি আজ যাকাত দিবেন[২০০-(২০*২)] ১৬০ টাকার। আর যদি কোম্পানীর ব্যালেন্স শীট পাওয়া না যায় বা কোম্পানীর আর্থিক অবস্খা জানা না যায় তবে সতকর্তামুলক পূর্ন বাজার দরের যাকাত দিয়ে দিবে ।