سؤال : হুজুর অাসসালামু অালাইকুম। হুজুর অাপনার উত্তটি পেয়েছি। কিন্তু অনেক সময় হলদে ভাব ছিল আবার অনেক সময় লালচে। যেগুলো লালচে ছিলো সেগুলোর ব্যাপারে এখন কি করণিয়? আর আমি সঠিক ভাবে বলতেও পারবোনা কোন গুলো পড়ানোর সময় লালচে আর কোন গুলো পড়ানোর সময় হলদে ছিল। এক্ষেত্রে বা কি করণিয়? কারণ এতদিন পর এতগুলোর হিসাব মনে রাখা সম্ভবও না এবং কখন কে আমার পিছনে নামাজ পড়েছে তাও বলা সম্ভব না। খুব জটিল একটি সমস্যায় পড়েছি। হুজুর আমি ফিসাবিলিল্লাহ নামাজ পড়াই। কিন্তু এত বড় একটি সমস্যায় পড়বো জানলে আরো সতর্ক হতাম। যাহোক হুজুর একটি সহজ সমাধা আশা করছি। আল্লাহ তা’য়ালা আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

جواب :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম
(এই প্রশ্নোত্তরটি মূলত পূর্বের একটি প্রশ্নোত্তরের সম্পূরক। তাই পাঠকের সুবিধার্থে মূল প্রশ্নোত্তরটি প্রথমে দেওয়া হল। ব্র্যাকেটের পরে চলমান প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম। হুজুর আমার প্রশ্ন আমি অফিসে কাজের পাশাপাশি ইমামতি করি। হুজুর আমি যদি মেসওয়াক বা ব্রাশ বা আঙ্গুল দিয়েও উযূর সময় দাত মাজি তবে অজু শেষ হবার পর যখন শেষ থুতু ফেলি তখন থুতু হালকা লাল থাকে। এমতাবস্থায় আমার নামায হবে কি? যদি আঙ্গুল বা মেসওয়াক না করি শুধু কুলি করি তবে এমন হয়না। বেশ কিছু সময় প্রায় ৮-১০ মিনিট অপেক্ষা করার পর ঠিক হয়। অনেক সময় অজুর পর এত সময় থাকে তাই ঐ অবস্থা নিয়েই নামায পড়াই। এতে আমার নামায ও মুক্তাদীদের নামায হবে কি? এটা নিয়ে বড়ই পেরেশানি ও সমস্যায় আছি। সঠিক ও উত্তম একটি সমাধান দিলে কৃতজ্ঞ থাকবো।
উত্তর :
ওয়া আলাইকুমুস সালাম
যদি উযূ করার পর থুতু ফেললে তা লালচে হয় তবে ঐ উযূ দ্বারা নামায পড়ালে আপনার মুক্তাদীর কারো নামায সহীহ হবে না। ঐ ভাব কাটার পরে পুনরায় উযূ করে নামায পড়তে হবে। আর থুতু হলদে বর্ণের হলে উযূ নষ্ট হবে না। এ অবস্থা নিয়ে আপনার নামায পড়ানো অন্যায় হয়েছে।
এক্ষেত্রে আপনি উযূর এতটুকু পূর্বে মিসওয়াক করবেন যততুকু পরে আর রক্ত আসে না। এরপর উযূ করবেন। এতেই আপনি মিসওয়াক করার ছাওয়াব পেয়ে যাবেন। পাশাপাশি একজন ডেন্টিস্টের শরণাপন্ন হলে হয়তবা সমস্যাটি দূর হয়ে যাবে।– আদ্দুররুল মুখতার ১/২৪(দারুল কুতুব) ; আল মুহীতুল বুরহানী ১/৩৮; মারাকীল ফালাহ, পৃষ্ঠা ৪৫; ফাতওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ ১/১১১)
চলমান প্রশ্নের উত্তরঃ প্রশ্নের উত্তর দিতে একটু দেরি হয়ে গেল। আসলে আপনার মাসআলাটি বেশ জটিল। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের বেশ কিছু শীর্ষস্থানীয় মুফতীয়ানে কেরামের সাথে আলোচনা করেছি। আর জবাবও সেই পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া হচ্ছে।
আপনি এক্ষেত্রে প্রবল ধারণার ভিত্তিতে নির্ধারণ করবেন কোন কোন ওয়াক্তে এবং মোট কত ওয়াক্তে উযূ ভঙ্গের পর আপনি নামায পড়িয়েছেন। আর উযূ ভঙ্গের মাপকাঠি বা আলামত পূর্বে বলা হয়েছে। এরপর আপনি যেখানে নামায পড়িয়েছেন সেখানে এলান করে দিবেন অমুক অমুক ওয়াক্তের নামায বা এতগুলো ওয়াক্তের নামায আমার পিছনে যারা পড়েছেন তারা তা দোহরিয়ে নিবেন। আর আপনার জানামতে যদি এমন কেউ থেকে থাকেন যিনি এখন নামায পড়েন না তবে পূর্বে উক্ত অবস্থায় আপনার পিছনে নামায পড়তেন তাহলে তাকেও চিঠি বা ফোনের মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন। এর দ্বারাই আপনি উক্ত দায় থেকে মুক্তি পাবেন। এক্ষেত্রে লজ্জা করে চুপ থাকা জায়েয হবে না। পূর্বে পর্যাপ্ত ইলম না থাকা সত্ত্বেও ইমামতির দায়ভার নেওয়ার খেসারতস্বরূপ এতটুকু তো করতেই হবে। তা না হলে এতগুলো মানুষের নামায নষ্টের দায়ভার আপনার উপর বর্তাবে। দুআ করি যেন আল্লাহ তাআলা আপনাকে হিম্মত দান করেন।–আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৯১, ৫৯২; আল বাহরুর রায়েক ১/৬৪০; আন নাহরুল ফায়েক ১/২৫৫; ফাতাওয়া মাহমূদিয়া ৬/৫৮৮

Loading