প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম হযরত আমার স্ত্রী আমাকে আমার প্রয়োজনের সময় সহবাস করতে দেয় না। তার এ ব্যপারে অনেক অনীহা। আমি ঔষধ ক্রয় করে দিয়েছি কিন্তু সে তা ঠিক মত খায় না। আমি আল্লাহ তাআলার মেহেরবানীতে ও তার দেয়া তাওফীক অনুযায়ী যথাসাধ্য চোখের হেফাজত করতে চেষ্টা করি। কিন্তু দিন দিন আমার এই অশান্তির কারণে আমি বিদিশা হয়ে যাচ্ছি। এই নিয়ে অনেক ঝগড়া, কথা কাটাকাটি, মারামারি, বিচার শালিশ ইত্যাদিও হয়েছে। এমনকি আমার স্ত্রী অন্যান্য মহিলার সামনে স্বীকারও করেছে যে সে আমার সাথে পারে না এবং তার এ ব্যাপারে অনীহা আছে। কিন্তু সে দ্বিতীয় বিবাহেরও অনুমতি দেয় না। আমাদের একটি সন্তানও আছে। আমি বড়ই অশান্তির মধ্যে আছি। না পারছি হালাল দ্বারা জরুরত পুরা করতে না পারছি হারামের দিকে যেতে। কি যে অশান্তি বুঝাতে পারবো না। সারাদিন শুধু অস্থির লাগে। এখন আমার কি করণীয়? (উল্লেখ্য আমি আপনাকে মনে হয় প্রশ্নটি আরেকবার করেছি কিন্তু প্রশ্নটি গিয়েছে কিনা তাই আবার করলাম।)
উত্তর :ওয়া আলাইকুমুস সালাম
আপনার স্ত্রীর এ হাদীসটি জানা থাকা দরকার-
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ فَبَاتَ غَضْبَانَ عَلَيْهَا لَعَنَتْهَا الْمَلَائِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ
অর্থঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন কেউ তার স্ত্রীকে (প্রয়োজন পূরা করার জন্য) বিছানায় ডাকে আর সে অস্বীকৃতি জানায় ফলে তার স্বামী রাগান্বিত অবস্থায় রাত্রি যাপন করে তবে ফেরেশতারা সকাল হওয়া পর্যন্ত তাকে (স্ত্রীকে) লানত দিতে থাকে।–সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ৩২৩৭
বিনা কারনে স্বামীকে সুযোগ না দেওয়া অনেক বড় গুনাহের কাজ। তার যদি এতে কোন কষ্ট না হয় অথবা সে অসুস্থ না থাকে তবে আপনাকে সুযোগ না দেওয়া ঠিক হবে না। তবে আপনারও মধ্যবর্তি বিরতি ও সময়ের মাত্রার প্রতি খেয়াল রাখা কর্তব্য যেন জুলুম না হয়ে যায়।
যদি আপনার স্ত্রীর অনীহা অসুস্থতার কারনে হয়ে থাকে তবে সে মাযূর। সেক্ষেত্রে আপনি বিজ্ঞ কোন যৌন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিলে ঠিক হয়ে যাবে ইংশাআল্লাহ। এমতাবস্থায় আপনার স্ত্রী কোন সময় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে অপারগতা প্রকাশ করলে এবং আপনি গোনাহের আশঙ্কা করলে স্ত্রীর পায়ুপথ ব্যতীত অন্য কোন অঙ্গ (যেমন রান) সম্ভোগের মাধ্যমে বীর্যপাত ঘটাতে পারেন। সে চিকিৎসা বা ওষুধ গ্রহন না করতে চাইলে এটা তার জন্য অন্যায় হবে।
আর যদি সে উক্ত অবস্থার উপর বহাল থাকে অথবা চিকিৎসা করেও সুস্থ না হয় এবং আপনি সবর করতে না পারেন অথবা গুনাহে পতিত হওয়ার আশংকা বোধ করেন তাহলে সামর্থ্য থাকলে দ্বিতীয় বিবাহের দিকে এগোতে পারেন। এজন্যই তো আল্লাহ তাআলা পুরুষদের জন্য একাধিক বিবাহের ব্যবস্থা রেখেছেন। এক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর জন্য দ্বিতীয় বিবাহে বাধা দেওয়া উচিত হবে না।–সূরা নিসা, আয়াত ৩; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং ২৫৮; সুনানে নাসাঈ, হাদীস নং ২৮৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৫; রদ্দুল মুহতার ৩/২০৪