প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম। ১। হুজুর আমি গত ৩০.১১.১৭ থেকে ০২.১১.১৭ তারিখ পর্যন্ত তিন দিনের জামাতে গিয়ে ছিলাম। সেখানে এক ভাই বললো খাওয়ার পর পানি আধা ঘন্টা পরে খেতে। এতে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আমার প্রশ্ন বিষয়টি কি কুরআন হাদীসে আছে নাকি মন গড়া। আর যদি সত্যই কোন উপকার থাকে বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হব। উল্লেখ্য আমি সব সময় ভাত খাওয়ার পর তৃপ্তি সহকারে পানি খাই। ২। এছাড়া আরেকটি কথা শুনেছি যে মাংসকে গোস্ত বলতে হয়। মাংস অর্থ নাকি মায়ের অংশ, যা বলা নিষেধ। বিষয়টি কতটুকু সহীহ।
উত্তর :ওয়া আলাইকুমুস সালাম
১। আল্লামা ইবনুল কয়্যিম আল জাওযিয়্যাহ তার যাদুল মাআদ নামক কিতাবে উল্লেখ করেছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাওয়ার পরেই পানি খেতেন না। তবে তিনি এটার কোন সনদ, হাওয়ালা বা রেফারেন্স উল্লেখ করেননি। আর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সনদসহ এমনটি কোথাও খুঁজে পাইনি। সহীহ সনদে কোথাও বর্ণিত না হলে সুন্নাত বলা মুশকিল। কেউ এমনটি খুঁজে পেলে অধমকে জানানোর অনুরোধ রইল। তবে বিষয়টি বাস্তব এবং চিকিৎসাবিজ্ঞান সম্মত। এর অনেক উপকারিতা রয়েছে।
২। যদি বিষয়টি এমন হয়ে থাকে যে, হিন্দুরা তাদের মা নামক দেবতার (গরু) অংশের কারনে গোস্তকে মাংস বলে থাকে তবে তা বলা নাজায়েয হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে এমনটি নিশ্চিতভাবে বলা কঠিন। কেননা যেমনিভাবে বাস্তবে এর কোন প্রমান পাওয়া যায় না তেমনিভাবে শাব্দিক বানানও তার বিপরীত নির্দেশনা দেয়। মাংস আর অংশ এর বানানের ভিন্নতা একেবারেই স্পষ্ট। কাজেই মাংসের উৎপত্তি যদি মায়রে অংশ থেকে হত তবে মাংস বানান “মাংশ” হত। অথচ কোন অভিধানে এমনটি লিখা নেই। আবার তারা গরু, খাসী, হাঁস, মুরগী ইত্যাদি সকলের ক্ষেত্রেই কিন্তু মাংস ব্যবহার করে। তাই মায়রে অংশ থেকে মাংসের উৎপত্তি একথা বলা মুশকিল। সেক্ষেত্রে তা বলতে কোন অসুবিধা নেই।
এখানে আরেকটি বিষয় রয়েছে। তা হল হিন্দুরা কিন্তু সচারচর মাংস শব্দই ব্যবহার করে থাকে। গোস্ত বলে না। তাই হাদীস শরীফে যেহেতু মুশরিকদের বিরোধিতা করতে বলা হয়েছে সে দৃষ্টিকোণ থেকে কেউ যদি মাংস বলা থেকে বিরত থেকে গোস্ত বলে থাকে তবে তা প্রশংসনীয় এবং সে ছাওয়াবের অধিকারী হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। সারকথা তারা মাংস শব্দটিই সর্বদা ব্যবহার করে থাকলে কেউ ঈমানী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গোস্ত বললে তা উত্তম বরং মুমিনের এমনটিই বলা উচিত।–সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ৫৮৯২; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং ৪০৩৩