প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম হযরত আমার প্রশ্ন গুলো হলো (১) নামাযের নজর দাঁড়ানো, রুকূ ও বসা অবস্থায় কোথায় থাকবে? এক কথা নামাযরত অবস্থায় নজর কখন কোন দিকে থাকবে? (২) ফরজ নামায পড়ার পর ৩ তাসবীহ আমল কি যেই ওয়াক্তে সুন্নাত আছে তা কি পড়ে পড়া উত্তম? আমি ফরজ পড়ে ৩ তাসবীহ আমল করে এরপর সুন্নাত পড়ি তা কি ঠিক আছে? আর ফজর ও মাগরিবের পর তো মাসনূন দুআ ও জিকির সুন্নাতের পড়ে আদায় করি? (৩) শবে বরাতে কি কি আমল করা যায়?

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম

(১) নামাযরত ব্যক্তি দাঁড়ানো অবস্থায় সিজদার স্থানে, রুকূতে দুই পায়ের মাঝে, সিজদায় নাকের ডগায় এবং বসা অবস্থায় কোলে দৃষ্টি রাখবে।–আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৭৮; আল বাহরুর রায়েক ১/২০৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৮৩।

(২) ফরজ নামাযের পরে সুন্নাত থাকলে আগে সুন্নাত পড়ে তারপর জিকির-আজকার ও তাসবীহ পড়া উত্তম।–সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৩৬৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৯২৪; রদ্দুল মুহতার ১/৫৩১; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৯৩,৩৯৪।

(৩) সাধ্যের ভিতরে থেকে যে কোন ইবাদাত করা যায়। যেমন- নামায, তিলাওয়াত, তাসবীহ- তাহলীল, জিকির- আজকার, তাওবা –ইস্তেগফার, দুআ  ইত্যাদি।অনুরূপভাবে পরদিন রোযা রাখার ব্যাপারেও হাদীস শরীফে এসেছে।–সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১৩৮৮।

এ রাতে বেশি বেশি দুআ করা চাই।হাদীস শরীফে এসেছে হযরত আয়েশা রা. বর্ণনা করেন একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে নামাযে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সেজদা করেন যে, আমার ধারণা হল তিনি হয়তো মৃত্যু বরণ করেছেন। আমি  তখন উঠে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামায শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ করে বললেন, হে আয়েশা, অথবা বলেছেন, ও হুমায়রা, তোমার কি এই আশংকা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না, ইয়া রাসূলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার আশংকা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। নবীজী জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন ইরশাদ করলেন-

‘এটা হল অর্ধ-শাবানের রাত (শাবানের চৌদ্দ তারিখের দিবাগত রাত)।  আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে তাঁর বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহপ্রার্থীদের প্রতি অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই। -শুআবুল ঈমান, বায়হাকী ৩/৩৮২-৩৮৩

অন্য এক হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে (শাবানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করে দেন। -সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং ৫৬৬৫।

উল্লেখ্য যে এ রাতে নির্দিষ্ট কোন নামায নেই। এবং নির্দিষ্ট কোন সূরা দিয়ে পড়তে হবে এটাও সঠিক নয়। বরং যে কোন সংখ্যক রাকাআত নামায যে কোন সূরা দিয়ে পড়া যায়। অনুরূপভাবে জামাআতের সাথেও নফল নামায পড়াও জায়েয নেই।

Loading