প্রশ্ন : এক নতুন পুত্রবধূকে শশূর কামুক মন ভাবে হাতে দরল ওবল্ল তুমি আমার বিছানায় আস একানে ঘূমাইবা,ছেলে তো বারীতে নাই।অন্য দিন বলে আমি তোমারে আনছি আমার ছেলে আনে নাই। এই শশূরের সামনে বের হওয়া কি জায়েয? এই মেয়ের স্বামী তার বাবার সামনে যাওয়ার জন্য বাদ্য করে, এখন কি করবে।দলিল সহ জানালে উপকৃত হব এবং দোয়া করব

উত্তর :

নামায, রোযা, হজ্জ,যাকাত ইত্যাদি ইবাদতের ন্যায় পর্দাও গুরুত্বপূর্ণ বিধান।  নামায, রোযা ইত্যাদি ইবাদত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদায় করলেই আদায় হয়ে যাবে কিন্তু পর্দা প্রতিটি মুহূর্তের জন্য ফরয।  অল্প সময়ের জন্যেও ইচ্ছাকৃতভাবে পর্দার খেলাফ চললে কবীরা গুনাহ হবে।  কাজেই প্রত্যেক নর-নারীর জন্য উচিত এমনভাবে চলা-ফেরা করা, যেন কোন অবস্থাতেই তার দ্বারা পর্দা লঙ্ঘিত না হয়।
শ্বশুর মাহরামের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারনে তার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ মূলত জায়েয।
তবে ফিতনার আশংকায় উলামায়ে কিরাম তাক্ওয়া ও পরহেযগারীর লক্ষ্যে কিছু সংখ্যক মাহরামের সাথে দেখা সাক্ষাত জায়েয মনে করা সত্ত্বেও তাদের সাথে মাহরাম সুলভ আচরণ তথা পর্দা করতে বলেছেন।  যেমন যুবক বা মাঝ বয়সী শ্বশুর, যুবতী মহিলার জন্য নিজ মেয়ের স্বামী এবং দুধ সম্পর্কীয় ভাই ইত্যাদি।
এদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ জায়েয হলেও বর্তমান যামানায় ফিতনার আশংকায় তাদের সাথে বংশীয় মাহরামদের ন্যায় ব্যবহার বা চলাফেরা না করা উচিত; বরং পর্দা করাই নিরাপদ এবং নির্জনে তাদের সাথে একত্রিত হওয়া উচিত নয়।  কারণ, আল্লাহ না করুন, যদি কোন মহিলার যুবক শ্বশুর বা মেয়ের স্বামীর সাথে পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন না করায় কামভাব নিয়ে স্পর্শ বা এ ধরনের অন্য কোন আচরণ হয়ে যায় তাহলে প্রথম সুরতে তার স্বামী তার জন্য চিরতরে হারাম হয়ে যাবে এবং ২য় ক্ষেত্রে তার মেয়ের স্বামী তার মেয়ের জন্য চিরতরে হারাম হয় যাবে, যা মহাবিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

হাদীসে পাকে ইরশাদ হয়েছে, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পত্নী উম্মুল মু‘মিনীন হযরত আয়িশা সিদ্দীকা (রাঃ) ও তাঁর পিতা হযরত আবু বকর (রাঃ) দু’জনে কোন এক নির্জন স্থানে বসে কোন বিষয়ে পরামর্শ করছিলেন।  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে গিয়ে দেখতে পেলেন তাদের মাঝখানে শয়তান বসে আছে।  হঠাৎ তিনি রাগ হয়ে বললেন, খবরদার! কখনো এরূপ নির্জন স্থানে বসবেন না।  কারণ, আপনাদের ধোঁকা দেবার জন্য দুষ্ট শয়তান আপনাদের মাঝখানে বসেছিল।  আমি তা দেখেছি।  এভাবে যে কোন নির্জন স্থানে একজন পুরুষ ও একজন নারী একত্র হলে সেখানে শয়তান হয় তৃতীয়জন।  (তিরমিযী শরীফ, ১/ ২২১)
উক্ত হাদীস শরীফ থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, শুধু বৈবাহিক বা দুধ সম্পর্কীয় মাহরাম নয়, বরং স্বামী-স্ত্রী ছাড়া যে কোন ধরনের মাহরামের সাথেও নির্জনে একত্রিত হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।

কাজেই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত স্ত্রীর জন্য তার কামুক শ্বশুরের সামনে যাওয়া, তার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করা বিশেষভাবে নির্জনে তার সাথে একত্রিত হওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয ও হারাম।  আর তার স্বামীকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলবে।

(রদ্দুল মুহতার ৬/ ৩৬৯; ইমদাদুল ফাতাওয়া  ৪/ ২০০; আযীযুল ফাতাওয়া ৭৫৮; ইসলাহে খাওয়াতীন ৩৭৬)

Loading