প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম।আমার এক প্রশ্নের উত্তরে আপনি জানিয়েছেন যে, পড়াশুনার উদ্দেশ্যে মহিলাদের দীর্ঘদিন হোস্টেলে একাকী অবস্থান শরীয়ত অনুসারে সম্পূর্ণ নাজায়েয ও হারাম।–সূরা আহযাব, আয়াত ৩৩; সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ১০৮৬; সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং ১১৭৩।এই উত্তরের প্রেক্ষিতে আমার সম্পূরক প্রশ্ন হলো, দ্বীনি শিক্ষার ক্ষেত্রেও কি এটা প্রযোজ্য হবে? যদি তা-ই হয় তবে বাড়ীর কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকলে মেয়েরা কি শিক্ষা/উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত-ই থেকে যাবে?ধন্যবাদ।
উত্তর :ওয়া আলাইকুমুস সালাম
সব শিক্ষার ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। তবে দ্বীনী শিক্ষার ক্ষেত্রে মহিলা মাদারাসাগুলোর ব্যবস্থাপনা সাধারণত কিছুটা ভিন্ন। সেখানে মেয়েরা অভিভাবক ছাড়া বাইরে যেতে পারে না। অন্য পরপুরুষও ভিতরে ঢুকতে পারে না। এরপরেও ভিতরে তাদের কন্ট্রোলের জন্য আলেমদের তত্ত্বাবধায়নে একাধিক আলেমা থাকেন। এরপরেও কোথাও যদি তাদের আবাসিক অবস্থান দ্বীনী দিকদিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয় তবে মহিলা মাদরাসাতেও তাদের আবাসিকভাবে থাকা নাজায়েয। মেয়েদের দ্বীনী তালীম গ্রহনের সঠিক পদ্ধতি হল তারা ঘরোয়াভাবে তাদের বাবা-মা, ভাই,স্বামী,দাদা এধরনের মাহরামদের নিকট থেকে দ্বীনী ইলম শিক্ষা করবে। এ তো গেল ঐ ইলম যা শিক্ষা করা ফরজ।
এবার আসুন দুনিয়াবী বিদ্যা (যা আখেরাতে একেবারেই নিষ্প্রয়োজন) সেটা তো শর্তসাপেক্ষে জায়েয মাত্র। সহশিক্ষার মাধ্যমে এই শিক্ষা গ্রহন করা তো হারাম। তাছাড়া মহিলাদের দায়িত্ব হল ঘর সামলান। আল্লাহ তাআলা বলেন “তারা (মহিলারা) তাদের গৃহে অবস্থান করবে” (সূরা আহযাব,আয়াত ৩৩)। কাজেই এই উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে তাদের লাভ কি? লাভ তো এটাই যে, সে বিবাহের পর এই বুলি আওড়াবে এত উচ্চশিক্ষা গ্রহন করে কি সংসারের হাড়ি ঠেলব? ফলে সে কর্মসংস্থানে জড়িয়ে পড়ে। কাজেই যে শিক্ষা তাকে (বেপর্দার মাধ্যমে) জাহান্নামের দিকে ঠেলে নিয়ে যায় তা গ্রহন করা কি বুদ্ধিমানের কাজ। আর এ বিদ্যা উচ্চ শিক্ষাই বা হয় কি করে? এ বিদ্যায় যে যত পারদর্শী সে দুর্নীতিতে তত পটু। দেখুন না বাস্তব অবস্থা। সেখানে না আছে আল্লাহ-রাসূলের পরিচয়, না আছে আমানত,সততা, দিয়ানত,সত্যবাদিতা, সভ্যতা, আখলাক। কিছু দিন আগেও তো এই পাক-ভারতে একমুখী শিক্ষা ছিল। আর তা হল দ্বীনী শিক্ষা। ইংরেজরা এসেই তো আমাদের উপর উচ্চ শিক্ষার(?) বোঝা চাপিয়ে দিয়ে গিয়েছে। কাজেই এমন নিস্ফল ও অপ্রয়োজনীয় বিদ্যা অর্জন করতে গিয়ে যদি চরিত্র বিসর্জন দিতে হয় বা জাহান্নামের রাস্তায় অগ্রসর হতে হয় তবে তা কীভাবে বৈধ হতে পারে।
আমার কথাগুলো হয়তবা একেবারেই সেকেলে বা অসামাজিক মনে হচ্ছে। একটু কুরআন-হাদীসের চশমায় দেখলেই তা স্পষ্ট হয়ে উঠবে। আর হয়তবা কোন সম্পুরক প্রশ্নও তৈরি হবে না।