প্রশ্ন : নারীরা কতটুকু দুনিয়াবী শিক্ষা অর্জন করতে পারবে এবং তা কীভাবে?

উত্তর :

মূলত সত্তাগতভাবে নারীদের জন্য দুনিয়াবী শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জন করতে শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বাধা নেই। সমস্যা হল এটা অর্জনের পদ্ধতি নিয়ে। যদি এর জন্য সহশিক্ষা, বেপর্দা ইত্যাদি বিষয় আসে তবে তা নাজায়েয হবে। আর যদি মেয়েদের শিক্ষার জন্য আলাদা ব্যবস্থাপনা থাকে, শিক্ষাদানকারীগণও মহিলা হন, মেয়েরা পরিপূর্ণ পর্দার সাথে যাতায়াত করে এবং এতে অন্য কোন ফেতনার আশংকা না থাকে তবে শর্তসাপেক্ষে জায়েয মাত্র। এর কোন ফযীলাত নেই। খুব ভালো করে বুঝা দরকার মহিলাদের নামায আদায়ের জন্য মসজিদে গমন করা নিষেধ। এখন লক্ষণীয় হল, এই নামাযের গুরুত্ব বেশী নাকি দুনিয়াবী শিক্ষার?
আসলে এ বিষয়ে শরীয়তের হুকুম তুলে ধরলেই একদল মানুষ নারী বিদ্বেষী, সেকেলে, মূর্খ, সমাজের বোঝা ইত্যাদি বুলি আওড়াবেন। আমাদের মা বোনেরাও এদিক দিয়ে পিছিয়ে থাকবেন না। কেমন যেন ঐ প্রবাদের ন্যায় “যার জন্য করি চুরি সেই বলে চোর”। আমরা চাই মা বোনদেরকে হেদায়েতের উপর আনতে, জাহান্নাম থেকে বাঁচাতে। একটু গভীরে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এই শিক্ষার মুখ্য উদ্দেশ্য কি? “পার্থিব জীবনের জীবিকা নির্বাহ” এটাই তো? অথচ মহিলাদের এমন কোন দায়িত্ব নেই। তাদের জিম্মায় কারো ভরণপোষণ নেই। আজকালের মা বোনেরা ইনকাম করার মধ্যে নাকি সন্মান দেখেন। বলি, ঘরে রাণীর মত আরাম আয়েশে বসে জীবন যাপন করার মধ্যে সন্মান নাকি বাইরে বেরিয়ে ইজ্জত আবরুকে ভুলন্ণ্ঠিত করার মধ্যে? আমরা সব পুরুষই হয়তোবা একমত হব যে, জীবিকা নির্বাহের পর্যাপ্ত কোন ব্যবস্থা থাকলে ভ্যান ঠেলতাম না, মাটি কাটতাম না, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পায়ের ঘাম মাথায় ফেলে হাল চষতাম না, কষ্ট করতাম না। আর এগুলো কিন্তু সন্মান অর্জনের জন্য করা হ্য় না। বরং বেচে থাকার তাগিদে। আর আমাদের মা বোনেরা এই কর্মের মধ্যে কি এত সন্মান খুঁজে পেলেন তা বুঝে আসে না। আমার মা সকাল থেকে মাটি কেটে জীবিকা নির্বাহ করবে আমার বোন পরপুরুষের মনোরঞ্জনের পাত্রি হবে এতেই কি সন্মান? অথচ আল্লাহ পাকের স্পষ্ট হুকুম হল মহিলারা ঘরে অবস্থান করবে। জাহেলী যুগের ন্যায় নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ করে বাইরে বের হবে না। (দেখুন সূরা আহযাব, আয়াত ৩৩)
আসলে বর্তমান অসঙ্গতিপূর্ণ নারীবাদীদের (?) দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কথাগুলো বিবেচনা করলে একেবারেই সেকেলে ও বেমানান মনে হবে। কিন্তু ইসলাম, কুরআন, সুন্নাহের চশমা দিয়ে তাকালে বাস্তবতা একেবারেই স্পষ্ট হয়ে উঠবে। মহিলাদের সন্মান তার ইজ্জত আবরু হেফাজত করার মধ্যে। তাছাড়া হাদীস শরীফে যে সব কারণে অধিকাংশ মহিলাদের জাহান্নামী বলা হয়েছে তার একটি হল, চালাক চতুর হয়ে স্বামীকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলা। (দেখুন সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ২৯) আর এই পার্থিব শিক্ষা যতই বেশী হয় মেয়েরা ততই দুরন্ত ও চতুর হয়ে এই ক্ষতির মধ্যে পতিত হয়। বাস্তবতা এর সাক্ষী। তালাক ও ডিভোর্সের জরীপেও বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠবে। এই তো সেদিন পত্রিকায় আসল তালাকের চেয়ে মহিলাদের ডিভোর্সের পরিমাণ অনেক বেশী। আর এটা বেশী হচ্ছে শিক্ষিত সমাজেই।
হ্যাঁ, কুরআন হাদীসের শিক্ষা এটা যত বাড়তে থাকে মানুষের মধ্যে মানবতা, পরোপকারিতা, ভালো গুনসমূহ ততই বাড়তে থাকে। কাজেই এদিকেই মনোনিবেশ করা বুদ্ধিমানের পরিচয়।

Loading