প্রশ্ন : আসসালামুয়ালাইকুম,হযরত ভালো আছেন আশা করি।আমার একটা দিলের হালত,কারো কাছে প্রকাশ করিনি!এই প্রথম করলাম।আমার প্রায় চিন্তা আসে তাই কেমন যেনো লাগে।রিয়া কোন পর্যায়ে পড়ে?কখন?ধ্বংশ হয়ে যায় আমল?আমার কেনো জানি কারো সামনে আমল করলে মনে হয় এই বুঝি রিয়া/লৌকিকতা হচ্ছে,যেমন জিকির’তাসবিহ হাতে রেখে করা;মাঝে বা যে কোনো আমল ই কারো সামনে করা,সবার সামনে টাকা দেওয়া ও।কিন্তু আমি রিয়া করে করিনা এরপর ও ভয় না জানি রিয়া হচ্ছে!আমার সব আমল কি বরবাদ হয়ে যাবে!কেউ যদি আমায় কোনো আমলের কথা জানতে চাই আমি কি করি বা যা ই জানি আলহামদুলিল্লাহ তখন বলতে ভয় হয়,যদি ও বলি কিছু,ভয় না জানি রিয়া হয়ে যায়!কিন্তু বললে ফায়দা;বা শুকুর আদায় হয় তা ও বুঝি তথাপি ও কেমন যেনো লাগে।আমি কি করবো হযরত।আমার আমল গুলো কি ধ্বংশ হয়ে যাবে এভাবে আমল করলে,দেখলে,বললে!আমি এখন অনার্স চতুর্থ বর্ষে পড়ছি।উত্তর বিশদ ভাবে বললে চির বাধিত হবো হযরত।জাযাকাল্লাহু খায়রন।

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। মেয়ের অসুস্থতাসহ বেশ কিছু জটিল প্রতিবন্ধকতার কারনে উত্তর দিতে বিলম্ব হওয়াতে আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
আপনি যে আমল এখলাছের সাথে একান্ত আল্লাহ্‌ তাআলার জন্য করবেন আল্লাহ্‌ তাআলা তার প্রতিদান ইনশাআল্লাহ আপনাকে দিয়েই দিবেন। এক্ষেত্রে অন্তরে আগত অহেতুক ওয়াসওয়াসার (কুমন্ত্রণা) প্রতি ভ্রূক্ষেপ করবেন না। শয়তান ওয়াসওয়াসা দিয়ে মানুষকে আমল থেকে বিরত রাখতে চায়। আপনি বরং অন্তরে ওয়াসওয়াসা এলে শয়তানকে উল্টো শাসিয়ে বলবেন ঠিক আছে আমি লোক দেখানোর জন্যই তাসবীহ হাতে নিলাম বা দান করলাম ইত্যাদি।এতে আপনার ওয়াসওয়াসা আস্তে আস্তে চলে যাবে ইনশাআল্লাহ।
আর ওয়াসওয়াসা আসাটাও ঈমানের একটি আলামত।কাজেই ঘাবড়াবেন না। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে একদা একদল সাহাবায়ে কেরাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, আমরা আমাদের অন্তরে এমন কথা অনুভব করি যা আমরা মুখে আনতে ভয় পাই। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন তোমরা কি আসলেই অন্তরে এমন কথা অনুভব কর।তারা বললেন হ্যাঁ।তিনি বললেন এটাই তো স্পষ্ট ঈমান (এর আলামত)। – সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৫৭।
আর যদি কোন আমল আপনি লোক দেখানোর জন্য করেন তবে আল্লাহ্‌ তাআলার কাছে এমন আমলের কোন মূল্য নেই।এর কোন ছাওয়াবও আপনি পাবেন না।
মোটকথা আপনার অন্তরই সাক্ষী দিবে আপনি কোনটি আল্লাহর জন্য করছেন আর কোনটি মানুষকে দেখানোর জন্য করছেন।যদি লোক দেখানোর জন্য করে থাকেন তবে নিয়তকে সহীহ করে নিন। আর যদি আল্লহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করে থাকেন তবে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন।
আর কোন আমল কাউকে বললে যদি তাতে কোন ফায়দা থাকে (যেমন এতে সে উৎসাহিত হয়ে আমল করবে) এবং এর দ্বারা অপরকে জানান উদ্দেশ্য না হয় অথবা নিজের বড়ত্ব প্রকাশ করা উদ্দেশ্য না হয় তবে অন্যকে জানাতে পারেন।
উল্লেখ্য যে, রিয়া অন্তরের একটি রোগ। এটা পরিপূর্ণভাবে দূর করতে হলে কোন আল্লাহ্‌ ওয়ালার সাথে ইসলাহী সম্পর্ক রাখা জরুরী।

Loading