প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম, মুহতারাম। আমরা জানি যে, muftihusain.com থেকে কোনো জাল হাদীস বা দুর্বল হাদীস দলীল হিসেবে পেশ করা হয় না। তবুও কিছু কিছু বেয়াদব পর্যায়ের লোকের জন্য প্রশ্নটি করতে বাধ্য হচ্ছি। আশা করি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, মুহতারাম। আপনার কাছে আমার প্রশ্ন নিম্নলিখিত হাদীসটি কি সহীহ পর্যায়ের? হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স:) বলেছেন,অর্ধ শাবানের রাত (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত)যখন আসে তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগীতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোযা রাখো। কেননা, এ রাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে আসেন এবং বলেন, কোন ক্ষমাপ্রার্থী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করব। আছে কি কোন রিযিক প্রার্থী? আমি তাকে রিযিক দেব। এভাবে সুব্‌হে সাদিক পর্যন্ত আল্লাহ মানুষের প্রয়োজনের কথা বলে তাদের ডাকতে থাকেন।-সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১৩৮৮।

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম
প্রথম কথা হল, আপনার বক্তব্য “muftihusain.com থেকে কোনো জাল হাদীস বা দুর্বল হাদীস দলীল হিসেবে পেশ করা হয় না” এটা যেমনিভাবে সঠিক নয় তেমনিভাবে আমি কোথাও এমনটি বলিনি। বরং যেসব স্থানে মুহাদ্দিসীনে কেরাম যঈফ বা দুর্বল হাদীস গ্রহণযোগ্য বলেছেন সেসব ক্ষেত্রে যঈফ হাদীস দ্বারা muftihusain.com এ-ও দলীল হিসেবে পেশ করা হয়। হ্যাঁ, জাল বর্ণনা কোথাও দলীল হিসেবে পেশ করা হয় না। আমার জানা মতে নির্ভরযোগ্য মুহাদ্দিসীনে কেরামের কেউই দুর্বল হাদীসকে সর্বাবস্থায় দলীল হিসেবে পেশের অযোগ্য বলেননি। অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় হল, যেখানে ইমাম নাসাঈ, ইমাম আবূ দাউদ, ইমাম তিরমিজী, ইমাম ইবনে মাজাহ, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল সহ অন্যান্য পাহাড়তুল্য মুহাদ্দিসীনে কেরাম যঈফ হাদীসকে দলীল হিসেবে পেশের যোগ্য মনে করেন এবং পেশ করেন সেখানে আমার পেশ করতে বাঁধা কোথায়? তাহলে কি তারা যঈফ হাদীস উল্লেখ করে ভুল করেছেন? আসলে এগুলো মূলত আমাদের এক শ্রেণীর ভাইদের অজ্ঞতা ও বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছুই নয়। আপনি নিম্নোক্ত লিঙ্কের যঈফ হাদীস সংক্রান্ত প্রবন্ধটি ভালো করে পড়লে আশা করি সব বুঝে যাবেন। লিঙ্কটি এই-
http://muftihusain.com/article/%e0%a6%af%e0%a6%88%e0%a6%ab-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%80%e0%a6%b8-%e0%a6%95%e0%a6%bf-%e0%a6%86%e0%a6%ae%e0%a6%b2%e0%a6%af%e0%a7%8b%e0%a6%97%e0%a7%8d%e0%a6%af/
দ্বিতীয় কথা হল, সুনানে ইবনে মাজার উল্লেখিত বর্ণনাটি যঈফ বা দুর্বল। কিন্তু মুহাদ্দিস ও ফকীহগণ হাদীসশাস্ত্রের মূলনীতি সম্পর্কে বলেছেন, সনদের বিবেচনায় কোনো হাদীস যদি কমজোর হয়, যার সমর্থনে আরো হাদীস পাওয়া যায়, তাহলে সেই হাদীস আর দুর্বল থাকে না। আর আমার উল্লেখিত প্রবন্ধে শবে বরাতের ফযীলাত সম্পর্কে প্রথমে সহীহ হাদীস উল্লেখ করা হয়েছে। অতঃপর তার অনুগামী বা সাক্ষী হিসেবে উক্ত রেওয়ায়েতটি উল্লেখ করা হয়েছে। আর এ কাজটি শুধু আমি নই বরং সকল মুহাদ্দিসীনই করে থাকেন। কাজেই আপত্তি কোথায়?

Loading