প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। শায়েখ! একজন দোকানদার আমার কাছে ৯০০০ (নয় হাজার) টাকা পায়, তাকে আমি একদাগে ৪০০০ হাজার দিলে সে খাতায় জমা করে, যা খাতায় লেখা আছে। এরপর আবার ৮০০ টাকা বাকিতে গ্রহন করি। কিছুদিন পর তথা রমযানের মধ্যে দ্বিতীয় দাগে আবার ৩০০০ হাজার টাকা দিয়ে তাকে জমা করতে বলি এবং বাকি আরও (৯০০০-৭০০০= ২০০০+৮০০)= ২৮০০ টাকা পরে দেব বলি, সেও আমাকে বলে ঠিক আছে। এরপর আমি বাকি নেওয়া বন্ধ করে দিই। গতকাল তাকে বাকি টাকা (২৮০০) দিতে গেলে আমার নিকট ৫৮০০ টাকা পাবে বলে জানায় এবং খাতাও দেখায়। কিন্তু আমার দেওয়া দ্বিতীয় দাগে ৩০০০ টাকা সে খাতায় জমা করেনি। ভূলে করেনি? নাকি কেন করেনি সেটা সে এবং আল্লাহ মালুম। এখন সে আমার নিকট ৫৮০০ টাকা দাবী করছে এবং আমি ৩০০০ টাকা জমা করিনি বলছে। এখন আমার করনীয় কী?

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ
প্রিয় দ্বীনী ভাই, আপনার উত্তরটি দিতে একটু দেরি হয়ে গেল। যদিও এ ধরণের প্রশ্নের উত্তর তাড়াতাড়িই দেওয়া উচিত। কিন্তু ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অপারগতার দরুন পারিনি। আসলে muftihusain.com সম্পূর্ণ আমার একাই সামলাতে হয়। শুধুমাত্র বড় কোন প্রশ্নোত্তর বা প্রবন্ধ টাইপ করার ক্ষেত্রে গাজীপুরের এক ভাইয়ের সহযোগিতা নিয়ে থাকি মাত্র। বর্তমানে আল্লাহ তাআলার মেহেরবানীতে প্রচুর পরিমাণে প্রশ্ন আসে। একটি প্রশ্নের উত্তর অনেকক্ষেত্রেই বিশ দিনেও দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। কেননা নিজের ব্যস্ততা খুব বেশী। দুটি মাদ্রাসায় খেদমত করতে হয়। আর ভিজিটরের সংখ্যাও এখন পূর্বের তুলনায় অনেক বেশী। একজন বিজ্ঞ মুফতী সাহেবকে সহযোগী হিসেবে রাখা জরুরী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ দিন থেকেই চাচ্ছি একজন যোগ্য আলেমকে সহযোগী হিসেবে রাখতে। মনে মনে লোক ঠিকও করে রেখেছি। তাহলে খেদমতটি ব্যাপক ও আরো বেগবান হতো। কিন্তু কাউকে রাখতে হলে তাকে কিছু তো দিতেই হয়। যদিও আমাদের কওমী পরিসরে তা একেবারেই সামান্য। মোটামুটি ৮/১০ হাজার টাকা হলে একজন যোগ্য লোক রাখা যায়। কিন্তু আমার নিজের পক্ষ থেকে কাউকে রাখার সঙ্গতি নেই বিধায় তা হয়ে উঠছে না। আমার পরিচালিত মাদ্রাসার অনুদান মোটামুটি হলেও সেখান থেকে একজনকে রাখা যেত। যাই হোক, ভবিষ্যতে লোক রাখতে পারলে ফোনে দ্রুত সময়ে সরাসরি মাসআলা জানার ব্যবস্থা চালু করার নিয়ত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন আমার সাইটে বিশেষ আবেদন দেওয়ায় হয়তোবা বেশ ভালো অনুদান আমার মাদ্রাসায় আসে। কিন্তু বাস্তবতা হল muftihusain.com এর শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্য থেকে বর্তমানে মাত্র একজন (যার বাড়ি গাজীপুরে) মাসিক ৫০০ টাকা অনুদান দিয়ে থাকেন। বর্তমানে মাদ্রাসার ঋণ প্রায় দেড় লক্ষাধিক। অথচ মাদ্রাসার মাসিক খরচ মাত্র ২৫/৩০ হাজার টাকা।
আর একটি কথা আগেও বলেছি, এখনো বলছি muftihusain.com থেকে আয়ের কোন ইচ্ছা আমার অতীতেও ছিল না আর ভবিষ্যতেও নেই ইংশাআল্লাহ। যারা সাইটটির সফটওয়্যার সংক্রান্ত ম্যানেজমেন্টে রয়েছেন, তারা আমাকে সাইটটির মাধ্যমে আয়ের কোন কোন পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত করালেও আমি সাফ জানিয়ে দিয়েছি এমন কোন নিয়ত আমার নেই। যাই হোক, কিছু অপ্রাসঙ্গিক কথা হয়ে গেল। সকলের নিকট দুআর আবেদন রইল যাতে আল্লাহ তাআলা আমাদের খেদমতটিকে আরো সামনে বাড়িয়ে দেন এবং সবকিছু গায়েবী খাজানা থেকে পূরা করে দেন।আমীন।
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যদি দোকানীকে আপনি নিশ্চিতভাবে উক্ত ৩০০০ টাকা দিয়ে থাকেন তবে তা পুনরায় আপনার দেওয়া কর্তব্য নয়।
উল্লেখ্য যে, এ ধরণের লেনদেন খাতায় স্পষ্টভাবে লিখে রাখা উচিত। নামায, রোযা, হজ, যাকাত ইত্যাদি ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ সমূহের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা দু একটি কথা পবিত্র কুরআনে বলেছেন। অথচ লেনদেন ও তা লিখে রাখার ব্যাপারে কুরআনের সবচেয়ে বড় আয়াত নাযিল করেছেন। তাই ভবিষ্যতে এ জাতীয় লেনদেনে লিখে রাখার প্রতি যত্নবান হবেন।–সূরা বাকারাহ, আয়াত ২৮২

Loading