প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম ১.কুলখানি করা জায়েয আছে কি? ২.আমাদের সমাজে দেখা যায় ইমাম সাহেবের খাবার সমাজের মানুষের বাড়ি থেকে আনা হয় সেক্ষেত্রে দেখা যায় কে ঘুষ খায় কে সূদ খায় তা বিবেচনা করা হয় না বা যায় না। এমন অবস্থায় ঐ ইমামের পিছনে নামায হবে কি? কেননা আমি জানি হারাম খেলে ৪০ দিন পর্যন্ত কোন ইবাদত কবূল হয় না?

উত্তর :

ওয়া আলাইকুমুস সালাম

১। না, নাজায়েয। তবে তিন দিন, চল্লিশ দিন ইত্যাদি এভাবে দিন তারিখ নির্ধারণ জরুরী মনে না করে যে কোন দিন ঈছালে ছাওয়াবের উদ্দেশ্যে গরীব মিসকীনদের খাওয়ানো জায়েয। তবে তা হতে হবে লৌকিকতা মুক্ত। আর এ খাবার ধনী গরীব নির্বিশেষে সকলকে খাওয়ানো যাবে না। বরং এটা গরীবদের হক।–রদ্দুল মুহতার ২/২৪০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৭

২। এ সমস্যা শুধুমাত্র ইমাম সাহেবের হবে কেন? এটা তো সবার ক্ষেত্রেই হবে। যেমন আপনি দোকানদার হলে যার নিকট পণ্য বিক্রি করবেন তিনি আপনাকে হালাল থেকে মূল্য দিবেন নাকি হারাম থেকে এটা আপনি জানেন না। কাউকে বাড়ি ভাড়া দিলে তিনি তা হারাম থেকে দিবেন কিনা জানেন না। আর্থিক লেনদেনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এই মাসআলা আসবে। আর সব ক্ষেত্রে তা খুঁটে খুঁটে বের করলে জীবন যাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়বে। কাজেই শরীয়তের মূলনীতি হল, যার ব্যাপারে কিছু জানা যায় না তার সাথে লেনদেন করতে বা তার বাড়ি খানা খেতে কোন অসুবিধা নেই। তার সাথে লেনদেনের পূর্বে তার হালাত বিস্তারিত জানার বা জিজ্ঞসা করার প্রয়োজন নেই। হাদীস শরীফে মুমিনদের সাথে ভালো ধারনা পোষণ করতে বলা হয়েছে। অনুরূপভাবে যদি কারো ব্যাপারে জানা যায় তার অধিকাংশ ইনকাম হালাল তবে তার সাথেও লেনদেন করতে সমস্যা নেই। হ্যাঁ, কারো অর্ধেক বা অধিকাংশ উপার্জন হারাম হলে তার হাদিয়া গ্রহন করা বা তার বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করা জায়েয নয়। তবে সে দেওয়ার সময় যদি বলে এটা হালাল থেকে দিচ্ছি সেক্ষেত্রে জায়েয।

কাজেই কারো অর্ধেক বা অধিকাংশ উপার্জন হারাম হলে তার বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করা ইমাম সাহেবের জন্য জায়েয নয়। আর এ দায়িত্ব তো মুসল্লীদের যে, তারা তাদের ইমামের হালাল খাবারের ব্যবস্থা করবে। তারা এতে ব্যর্থ হলে তার পিছনে ইক্তেদা করা ব্যতীত উপায় কি? যে মুসল্লীরা তাদের ইমামের জন্য হালাল রুজির ব্যবস্থা করতে পারে না তারা হারামখোর ইমামের পিছনে নামায পড়বে এটাই স্বাভাবিক।

Loading